মোঃ কামরুল হাসান: কালের আবর্তনে ও পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণে হারিয়ে যাচ্ছে তালের পাতায় মোড়ানো নিপুণ কারুকার্য খচিত বাবুই পাখির বাসা। সময়ের বিবর্তনে বাবুই পাখির বাসা অনেকটা স্মৃতির অন্তরালে বিলীন হওয়ার পথে। অথচ আজ থেকে প্রায় ১৪ থেকে ১৫ বছর আগেও গ্রাম-গঞ্জের মাঠে ঘাটের তাল গাছে দেখা যেত এসব বাসা। বাবুই পাখির বাসা শুধু শৈল্পিক নিদর্শনই ছিল না, মানুষের মনে চিন্তার খোরাক জাগ্রত করতো এবং মানুষকে স্বাবলম্বী হতে উৎসাহিত করতো।কবি রজনী কান্ত সেন’র ভাষায় ‘বাবুই পাখিরে ডাকি বলিছে চড়াই, কুঁড়েঘরে থেকে করো শিল্পের বড়াই। আমি থাকি মহাসুখে অট্টালিকা পরে, তুমি কত কষ্ট পাও রোদ, বৃষ্টি-ঝড়ে’। সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, মিরসরাই উপজেলার পাহাড়ি জনপদের বিভিন্ন গ্রামে এখন আর আগের মত চোখে পড়ে না বাবুই পাখি ও তার নিজের তৈরি দৃষ্টিনন্দন সেই ছোট্ট বাসা তৈরির নৈসর্গিক দৃশ্য। বাবুই পাখির নিখুঁত বুননে এ বাসা টেনেও ছেঁড়া কষ্টকর। প্রতিটি তালগাছে ১’শ থেকে ১’শ ২০ টি বাসা তৈরি করতে সময় লাগে ১০ থেকে ১২ দিন। খড়, কুঁড়া, তালপাতা, ঝাউ ও কাশবনের লতাপাতা দিয়ে বাবুই পাখি উঁচু তালগাছে বাসা বাঁধে। সেই বাসা দেখতে যেমন আকর্ষণীয়, তেমনি অনেক মজবুত। প্রবল ঝড়েও তাদের বাসা ভেঙ্গে পড়ে না। পুরুষ বাবুই পাখি বাসা তৈরির পর সঙ্গী খুঁজতে যায় অন্য বাসায়। সঙ্গী পছন্দ হলে স্ত্রী বাবুইকে সাথী বানানোর জন্য পুরুষ বাবুই নিজেকে আকর্ষণীয় করতে খাল, বিল ও ডোবায় পানিতে গোসল এবং গাছের ডালে ডালে নেচে বেড়ায়। দৃষ্টিকাড়া গাছের ঝুড়ির মতো চমৎকার বাসা বুনে বাস করায় এ পাখির পরিচিতি বিশ্ব জোড়া। বাবুই পাখির অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো রাতের বেলায় ঘর আলোকিত করতে জোনাকি পোকা ধরে নিয়ে বাসায় রাখে এবং সকাল হলে ছেড়ে দেয়। প্রজনন সময় ছাড়া অন্য সময় পুরুষ ও স্ত্রী বাবুই পাখির গায়ে পিঠে তামাটে কালো বর্ণের দাগ হয়। নিচের দিকে কোন দাগ থাকে না। ঠোঁট পুরো মোসাকার ও লেজ চৌকা। তবে প্রজনন ঋতুতে পুরুষ পাখির রং হয় গাঢ় বাদামি। অন্য সময় পুরুষ ও স্ত্রী বাবুই পাখির পিঠের পালকের মতই বাদামি হয়। কয়লার সমাজসেবক ও কানাডা প্রবাসী ব্যবসায়ী আফসার চৌধুরীর সাথে আলাপকালে বলেন, ছোটবেলায় দেখতাম আমাদের পাহাাড়ি জনপদে রাস্তার দু-পাশে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে থাকা তালগাছ গুলোর মধ্যে অনেক বাবুই পাখির বাসার ছিলো। কিন্তু এখন কালের আবর্তন ও পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণে সেই বাবুই পাখির বাসা সচরাচর আর দেখা যায়না। বাবুই পাখির নিপুণ কারুকার্য খচিত তৈরি করা বাসাটি আজ হারিয়ে যেতে বসেছে। যদিওবা আমাদের পুরো এলাকাজুড়ে একটি তালগাছে এবছর তারা বাসা বেঁধেছে। বাড়িতে গেলে তাদের কিচিরমিচির শব্দে সকালবেলা আমার ঘুম ভাঙ্গে।
শর্ত পূরণ না করায় ফেনীর ৯...
ফেনীর মেধাবী মুখ রিয়ার এড...
চৌদ্দগ্রামে জুয়া খেলার সর...
ছাগলনাইয়ায় অবহেলিত মানু...
Subscribe to our mailing list to get the new updates!