বিশেষ প্রতিনিধি: ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার সীমান্তবর্তী অঞ্চল আমজাদ হাট ইউনিয়ন অপরাধ ও মাদকের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। এখানে হাতের নাগালেই রয়েছে ভারতীয় মাদক। মাদকদ্রব্যের মধ্যে রয়েছে মদ, গাজা, ফেনসিডিল, ইয়াবা ট্যাবলেট, ম্যাগডুয়েল নাম্বার ওয়ান, অফিসার চয়েজ ও বিয়ারসহ বিভিন্ন ধরণের মাদক। এখানকার যুব সমাজ দিন দিন অপরাধ ও মাদকের দিকে ধাবিত হচ্ছে। এতে করে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে পরিবার ও সমাজ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়রা জানান, মাদক বিক্রেতারা তাদের উপযুক্ত স্থান হিসেবে জাফর ইমাম উচ্চ বিদ্যালয়ের আশপাশের দোকানপাট, ফেনাপুষ্পরনী সীমান্তের বিভিন্ন স্থান, উত্তর তারাকুচার নতুন পাড়ায় আনোয়ারের বাড়ী, উত্তর তারাকুচায় সাইফুলের বাড়ী, ফেনাপুষ্করনীতে রুবেলের বাড়ী, ফেনাপুষ্করনী রিষ্টমুখের হান্নান এবং ওহাবের বাড়ী, ধর্মপুর চৌরাস্তার মাথায় সাইফুলের বাড়ী, ইসলামীয়া বাজারে ফারুকের বাড়ী ও দক্ষিণ তারাকুচা গ্রামের হানিফ ও শেখার বাড়ী বেচে নিয়েছে। গত ২৭ মার্চ রাতে অভিযান চালিয়ে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবি’র সদস্যরা বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য উদ্ধার করে। উদ্ধারকৃত মাদকদ্রব্যের মধ্যে ভারতীয় ম্যাগডুয়েল নাম্বার ওয়ান ২৮ বোতল, অফিসার চয়েজ ব্লু ৪ বোতল, বিয়ার (সিম্বা) ৩৪ বোতল, ইয়াবা ট্যাবলেট ৪’শত ২ পিস ও গাজা ৪৫০ গ্রাম। তারাকুচা সীমান্ত ফাঁড়ির নায়েক (গোয়েন্দা) ফারুক জানায়, ২৭ মার্চ রাত ১২ টার দিকে গোপন সংবাদ পেয়ে নায়েক সুবেদার মোখলেছুর রহমান’র নেতৃত্বে ৮ জন জওয়ান একই ইউনিয়নের ফেনাপুষ্করনী গ্রামের হাফেজ আহাম্মদ মেম্বারের বাড়ীতে অভিযান চালিয়ে তার ছেলে জহিরুল ইসলাম রুবেলের বশতঘরের পাশে পরিত্যক্ত টয়লেটের পেছনে মাটি চাপা অবস্থায় এবং বস্তা ভর্তি শুকনো পাতা থেকে এবং ঘরের আশ পাশ থেকে এসব ভারতীয় মাদকদ্রব্য উদ্ধার করা হয়। গোপন তথ্যে আরো জানা যায়, এসব মাদক দ্রব্য ক্রয়বিক্রয়ের সাথে কিছু অসাধু জনপ্রতিনিধি এবং রাজনৈতিক ব্যক্তি জড়িত রয়েছে। চোঁখের সামনে সবকিছু দেখলেও ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়না। তারাকুচা সীমান্ত ফাঁড়ির নায়েক সুবেদার মোখলেছুর রহমান গণমাধ্যমকে জানায়, স্থানীয় এলাকাবাসী সঠিক সময়ে আমাদের তথ্য দিয়ে সহযোগীতা করেনা। এলাকাবাসী যদি সঠিক সময়ে সঠিক তথ্য দেয় তাহলে আমরা অভিযানের মাধ্যমে মাদক বিক্রেতা এবং সেবনকারীদের ধরতে পারতাম। স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বিজিবি সদস্যদের নাকের ডগায় মাদক আসছে আবার বিক্রি হচ্ছে তাহলে তারা তাদের ধরেনা কেন? নিশ্চয়ই তাদের নাটকীয়ভাবে মাদক কারবারীদের সাথে সখ্যতা রয়েছে। সরেজমিনে উক্ত ইউনিয়ন ঘুরে জানা যায়, মাদক সেবনকারীরা রাতের আধাঁরে বা গোপনে নয় তারা দিনে রাতে প্রকাশ্যে সমান তালে মাদক বিক্রয় এবং সেবন করছে। মাদকের ছোবল এমন পর্যায়ে চলে গেছে যুবসমাজ চরম হুমকীতে রয়েছে।স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মীর হোসেন জানান, মাদক নির্মূলে সরকারের যে জিরু টলারেন্স নীতিমালা রয়েছে সেই নীতিমালা বাস্তবায়নের লক্ষে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। কিছু জনপ্রতিনিধী এবং রাজনৈতিক ব্যক্তি মাদক পাচার এবং সেবনের সাথে জড়িত রয়েছে এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি (মিরু) বলেন, মাদক পাচারকারী বা সেবনকারী যেই হোক তার বিরুদ্ধে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব সে যেই হোক কাউকে ছাড় নেই।মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ফেনী জেলার সহকারী পরিচালক মোঃ আবদুল হামিদ জানান, আমরা আমাদের নিজস্ব সোর্সের মাধ্যমে মাদক সংক্রান্ত বিষয়ে অনুসন্ধান করে থাকি এবং সঠিক অনুসন্ধানের আলোকে অভিযান পরিচালনা করি। সঠিক তথ্যের ভিত্তিতে ইতোমধ্যে ফুলগাজী উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে মাদকসহ অনেক মাদক ব্যবসায়ী এবং সেবনকারীকে আমরা গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি এবং তাদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছি। মাদকের বিরুদ্ধে আমরা জিরো টলারেন্স এই বষয়ে কাউকে বিন্দুমাত্র ছাড় দেবনা এবং আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।ফুলগাজী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কুতুব উদ্দীন জানান, মাদকদ্রব্যের বিষয়ে কোন ছাড় নেই। সে যেই হোক তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি আরো বলেন, যেখানেই মাদক বিক্রয় এবং সেবন করা হবে সেখান থেকে গোপনে আমাদের জানালে আমরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
শর্ত পূরণ না করায় ফেনীর ৯...
ফেনীর মেধাবী মুখ রিয়ার এড...
চৌদ্দগ্রামে জুয়া খেলার সর...
ছাগলনাইয়ায় অবহেলিত মানু...
Subscribe to our mailing list to get the new updates!