প্রফেসর মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম: শিক্ষা বলতে আমরা বুঝি আচরণিক পরিবর্তন। সকল ধরনের যৌক্তিক ও বিজ্ঞানসম্মত পরিবর্তন যা আমাদেরকে একজন সুনাগরিক, আদর্শ ও ভালো মানুষে পরিণত করবে।শিক্ষা গ্রহণকারী ব্যক্তিকে আমরা বলি শিক্ষিত মানুষ। কিন্তু শিক্ষা দুই ধরনের, সুশিক্ষা ও কুশিক্ষা। যারা শিক্ষা প্রদান করেন তারা সমাজে শিক্ষক নামে পরিচিত। কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কুশিক্ষা প্রদান করা হয় না। তাহলে কুশিক্ষা যাদের কাছে বিরাজমান তারা নিজেরাই এই শিক্ষার শিক্ষক। কোন মানুষ জন্ম থেকে কুশিক্ষা নিয়ে জন্মে না।তার আচরণ যখন মানুষ ও সমাজের জন্য ক্ষতিকর হয় তখনই বুঝতে হবে তার মধ্যে যৌক্তিক আচরণিক পরিবর্তন ঘটেনি।তারাই সমাজ ও দেশের জন্য বিষফোঁড়া। কোন শিক্ষার্থী যদি প্রকৃত অর্থে জ্ঞান অর্জন করে এবং শিক্ষকদের অনুসরণ করে তাহলে সে কখনও সমাজের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে না।তার দ্বারা দেশ ও জাতি উপকৃত হবে।একজন শিক্ষার্থী ১০ বৎসরে এসএসসি শেষ করে, সে ইচ্ছা করলে ৫ বৎসর পরিশ্রম করে সিলেবাস শেষ করে এসএসসি পাশ করতে পারে। কিন্তু তারমধ্যে সকল ধরনের গুণাবলী ও দক্ষতা সৃষ্টির জন্য সময় দিয়ে তাকে যোগ্য করে তোলা হয়। যাতে কর্মক্ষেত্রে সে তার দক্ষতা ও যোগ্যতার পরিচয় দিয়ে দেশের সেবা করতে পারে।করোনা মহামারীর কারণে ২০২০ সালের ১৮ মার্চ থেকে অদ্যাবধি আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। ফলে শিক্ষার্থীদের যথাযথ শিক্ষার ঘাটতি দেখা দিচ্ছে। অপরদিকে তারা হতাশা ও বিষন্নতায় ভুগছে। মেধা বিকাশের সুযোগ হারাচ্ছে। অনেকে আবার শিক্ষা জীবনের ইতি টানছে।আশাকরা যাচ্ছে অচিরেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হবে।শিক্ষা গ্রহণের পথ সুগম হবে।মানুষকে সম্পদে পরিণত করার মাধ্যম হলো শিক্ষা। বর্তমান সময়ে শিক্ষার্থীদেরকে আরেকটি বিষয়ে শিক্ষা প্রদান জরুরী হয়ে পড়েছে, তাহলো পরিবেশ শিক্ষা। বিশ্ব আজ মহাবিপর্যয়ের দিকে এগুচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে পৃথিবী নামক গ্রহটি হুমকির সম্মুখীন। বিশ্বের কোথাও খরা,একই সময়ে অন্যখানে বন্যা। একজায়গায় শীত,অন্যজায়গায় গরম।উত্তরের বরফ গলে দক্ষিণ অংশ ডুবছে।সম্প্রতি ইংল্যান্ডে তীব্র তাপমাত্রা ও বন্যা,পাকিস্তানে ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা, কানাডার ব্রিটিশ কলাম্বিয়ায় তীব্র তাপমাত্রায় মানুষের মৃত্যু, জার্মানি ও চীনে মরণঘাতী বন্যা,জাপান ও ভারতে বন্যা ও ভূমিধস, তুরস্কে বিপর্যয়। ইউরোপীয়ান ফরেস্ট ফায়ার ইনফরমেশন দেয়া তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে ইউরোপের গ্রিস,তুরস্ক, ইতালি, রোমানিয়া, ক্রোয়েশিয়া, সার্বিয়া ও ইউক্রেনে দাবানল জ্বলছে। যুক্তরাষ্ট্রের গ্রিণভিল ও উত্তর আমেরিকার কিছু অঞ্চল ইতিমধ্যে আগুনের কবলে পড়ে ধ্বংস হয়ে গেছে।গতমাসে কানাডার ব্রিটিশ কলাম্বিয়া রাজ্যের একটি গ্রাম দাবানলে পুড়ে ছাঁই হয়ে যায়। বাংলাদেশেও বিভিন্ন সময়ে ঝড়,জলোচ্ছ্বাস, ঘূর্ণিঝড়, সাইক্লোন, বন্যাসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দূর্যোগের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, বিশেষত উপকূলীয় অঞ্চল। এই সকলের মূলে রয়েছে মানুষের প্রাণ ও প্রকৃতির ওপর অনাচার। তাইতো প্রকৃতি আমাদের অস্তিত্বের শিকড়ে টান দিচ্ছে, বারবার প্রতিশোধ নিচ্ছে। গত ৯/৮/২০২১ তারিখে জাতিসংঘের সংস্থা ইন্টার গভর্ণমেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেইঞ্জ ৪২ পৃষ্ঠার একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে।প্রতিবেদনে পরিবেশ দূষণের পরিস্থিতি " মানব জাতির জন্য লাল সংকেত" হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। হাজার হাজার বিজ্ঞানীর গবেষণা মানব জাতিকে সাফ জানিয়ে দিল, " যা হয়েছে অনেক। পৃথিবী নামের এই গ্রহটিকে বাঁচাতে হলে, নিজেদের বাঁচাতে হলে; নষ্ট করার মতো সময় আর হাতে নেই। যত দ্রুত সম্ভব কমাতে হবে গ্রীনহাউজ গ্যাসের নির্গমন।" তাই আমাদের শিক্ষার্থীদেরকে সকল শিক্ষার সাথে পরিবেশ শিক্ষাও নিতে হবে।তাদেরকে পরিবেশ,বন,বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে জানতে হবে। আজকের শিক্ষার্থীরাই আগামীদিনের কর্ণধার। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রশমন ও অভিযোজনের শিক্ষা বর্তমান সময়ের জন্য অতি জরুরী। " পরিবেশ ক্লাব বাংলাদেশ " বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের মাঝে পরিবেশ, বন,বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে শিক্ষা ও সচেতনতার কাজ করে যাচ্ছে। জনস্বাস্থ্য শিক্ষা নামক যেমন স্বাস্থ্যখাতে একটি উইং আছে তেমনি ক্লাব মনে করে পরিবেশ মন্ত্রণালয়েও পরিবেশ শিক্ষা নামক একটি উইং থাকা দরকার। এমনকি ক্লাব আরও দাবি করছে, শিক্ষা কারিকুলামে স্কুলে একটি আলাদা বিষয় থাকা উচিত। পরিশেষে, জাতিসংঘের সতর্ক বার্তাকে গুরুত্ব দিয়ে বাংলাদেশকে পরিবেশ সুরক্ষার জন্য সকলে মিলে কাজ করি।
শর্ত পূরণ না করায় ফেনীর ৯...
ফেনীর মেধাবী মুখ রিয়ার এড...
চৌদ্দগ্রামে জুয়া খেলার সর...
ছাগলনাইয়ায় অবহেলিত মানু...
Subscribe to our mailing list to get the new updates!