এস.এন আবছার: সোনাগাজীতে পিতৃ পরিচয়ের স্বীকৃতি আদায়ে ৩৭ বছর যাবত মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন মর্জিনা আক্তার নামে এক অসহায় নারী। প্রচলিত সমাজে নিগৃহীত এই নারী ১৯৮৫ সালে উপজেলার চরদরবেশ ইউনিয়নের চরসাহাভিকারি গ্রামে রক্ষণশীল সমাজের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করেই তার জম্ম। ভুক্তভোগী পরিবার ও স্থানীয়দের সাথে আলোচনা করে জানা যায়, ১৯৮৪ সালের জুন মাসে চরদরবেশ ইউনিয়নের চরসাহাভিকারি গ্রামের কালাম উকিল বাড়ীতে খাদিজা বেগম নামে একজন কিশোরী স্থানীয় আবদুল খালেক নামীয় এক প্রভাবশালী ব্যক্তির দ্বারা বিয়ের প্রলোবনে ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন। পরবর্তিতে কিশোরী খাদিজা গর্ববতি হয়ে গেলে সমাজে ঘটনা জানাজানি হয়। কিন্তু ধর্ষক আবদুল খালেক ওই কিশোরী কে বিয়ে না করে উদাও হয়ে যায়। এরই মাঝে ১৯৮৫ সালের এপ্রিল মাসের ২০ তারিখে একটি ফুটফুটে কন্যা সন্তানের জম্ম দেন ধর্ষিতা কিশোরী। বিয়ে বহির্ভূত সন্তান জম্মদানের অপরাধে পরিবারটি সামাজিক ভাবে নিগৃহীত হতে থাকে। সন্তান জম্মদানের কিছুদিন পরে শিশুটির মা খাদিজা বেগমের রহস্যজনক মৃত্যু হয়। এই মৃত্যুর ঘটনা কে ধর্ষক আবদুল খালেক ও তার লোকজন আত্মহত্যা বলে প্রচার করলেও ধর্ষিতার পিতা আবুল কালাম ফেনীর আদালতে ধর্ষক ও তার ৪ সহযোগীর নামে মামলা দায়ের করেছিলেন। কিন্তু আর্থিক অনটনের কারণে সেই মামলার খোঁজ খবর নিতে পারেননি।
এরই মাঝে তৎকালীন ইউপি অফিসে চেয়ারম্যান ইলিয়াস এর নেতৃত্বে স্থানীয় ব্যক্তিবর্গ কে নিয়ে ধর্ষণ ও মৃত্যুর বিষয়ে উভয় পক্ষকে সমঝোতার চেষ্টা করলেও সদ্য ভূমিষ্টা কন্যা শিশু মর্জিনা আক্তারের পিতার স্বীকৃতির বিষয়ে কোন সিদ্ধান্তে আসতে পারেননি। সেই শিশু কণ্যাটি বড় হওয়ার পর থেকে তিনি তার পিতার স্বীকৃতি আদায় করতে সমাজের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন কিন্তু প্রভাবশালী আবদুল খালেক সব ম্যানেজ’র কারণে খাদিজার পিতৃপরিচয় আর নিশ্চিত হয়নি।
পিতৃ পরিচয়ের দাবীতে সংগ্রাম করে যাওয়া সেই অসহায় নারী মর্জিনা আক্তার দৈনিক স্টার লাইন প্রতিনিধির কাছে একটি ভিডিও বক্তব্য প্রদান করেছেন, যাতে তিনি বলেন, আমি যখন পিতার পরিচয়ের দাবীতে আবদুল খালেকের কাছে যাই তখন কিছু লোক আমাকে টাকা দিতে চায়। আমি টাকা নয়; পিতৃ পরিচয় চাই, সমাজের কাছে পিতৃপরিচয়হীন নিগৃহীত থাকতে চাইনা।
মর্জিনা আক্তারের জম্ম নিবন্ধন ও জাতীয় পরিচয়পত্র পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে, সেখানে পিতার নাম আবদুল খালেক রয়েছে। চরদরবেশ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম ভূট্টো জানান, আমার কাছে এই মহিলা একটি অভিযোগ দিয়েছিলেন - বিষয়টি আমার এখতিয়ারে না থাকায় আদালতে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছি।
উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা নার্গিস আক্তার বলেন, এরকম একজন নারী কে তার অধিকার আদায়ে আমাদের অবশ্যই সহযোগিতা করা উচিত। খোঁজ খবর নিয়ে মহিলাটিকে সহযোগিতা করা হবে।উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস.এম মনজুরুল হক বলেন, বিষয়টি জটিল আকার ধারণ করেছে। আদালতের দ্বারস্থ হলে ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে তার পিতার পরিচয় নিশ্চিত করার মত আইনি প্রক্রিয়া রয়েছে। অসহায় মহিলা আমার কাছে এলে অবশ্যই সবধরনের সহযোগিতা করা হবে। অভিযুক্ত আবদুল খালেকের ফোনে বারবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। পরে তার বাড়ীতে গেলে কেউ বাড়ীর দরজা খুলেননি। তবে গ্রীলের ভেতর থেকে তার স্ত্রী জানিয়েছেন, আবদুল খালেক বাড়ীতে নাই। তার সন্ধানে জমাদার বাজারে গেলে ও তিনি দেখা না করে সটকে পড়েন।
শর্ত পূরণ না করায় ফেনীর ৯...
ফেনীর মেধাবী মুখ রিয়ার এড...
চৌদ্দগ্রামে জুয়া খেলার সর...
ছাগলনাইয়ায় অবহেলিত মানু...
Subscribe to our mailing list to get the new updates!