নিজস্ব প্রতিনিধি: ফেনীতে রোপা আমন আবাদে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। চলতি মৌসূমে জেলায় ৬৬ হাজার ৫৩৫ হেক্টর আবাদের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ইতোমধ্যে ১৬ হাজার ২৫৫ হেক্টর জমিতে আমন লাগানো হয়েছে। অতিবৃষ্টি-অনাবৃষ্টি সমস্যা না হলে আগামী মাসের মাঝামাঝি সময়ে জেলায় আমন লাগানোর কাজ শেষ হবে বলে প্রত্যাশা স্থানীয় কৃষকদের। এবার ফেনীতে ৬টি নতুন জাতের ধানের আবাদ শুরু হয়েছে। এরআগে চাষীদের উদ্ধুদ্ধ করতে জেলায় নির্বাচিত ২১০০ ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে সার ও বীজ বিতরণ করা হয়। এছাড়াও জেলায় বৈরী আবহাওয়া মোবাবেলায় ৫ ভাগ অতিরিক্ত বীজতলা প্রস্তুুত রাখা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে ফেনীতে আমন রোপা শুরু হয়। গত সপ্তাহে অতিবৃষ্টির কারণে জেলার বিভিন্ন স্থানে রোপা আমন পানিতে তলিয়ে যায়। এতে কিছুটা শঙ্কার মাঝে পড়েন কৃষকরা। তবে ২/৪ দিনের মাথায় পানি নেমে যাওয়ায় ক্ষতি থেকে রক্ষা পান তারা। এখন কৃষকরা কেউ বীজতলা থেকে ধানের চারা তুলছেন। কেউ আমনের জমি তৈরী করছেন। আবার কেউ তা ক্ষেতে রোপন করছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, চলতি মৌসূমে ফেনীতে ৬৬ হাজার ৫৩৫ হেক্টর জমিতে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তন্মধ্যে হাইব্রিড জাতের ৭১ হেক্টর, উফশী জাতের ৬০ হাজার ৪৪ হেক্টর ও স্থানীয় জাতের ৬ হাজার ৪২০ হেক্টর আবাদের কথা রয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ইতোমধ্যে জেলায় উফশী জাতের ১০ হাজার ২৫০ হেক্টর, স্থানীয় জাতের ৬ হাজার ও হাইব্রিড জাতের ৫ হেক্টরে আমনের চারা রোপন সম্পন্ন হয়েছে। জেলা দপ্তরে কর্মরত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মিঠুন ভৌমিক জানান, ফেনী সদর উপজেলায় ১৫ হাজার ৯৪০ লক্ষ্যমাত্রার স্থলে ৩ হাজার ৫শ হেক্টর জমিতে ধানের চারা লাগানো হয়েছে। একইভাবে দাগনভূঞা উপজেলায় ৯ হাজার ২৫০ লক্ষ্যমাত্রার স্থলে ১ হাজার হেক্টর, ফুলগাজীতে ৬ হাজার ২০৫ এর স্থলে ১ হাজার ৫ হেক্টর, পরশুরামে ৫ হাজার ৮৫১ এর স্থলে ২ হাজার ৫ হেক্টর, দাগনভূঞায় ৮ হাজার ৩১৭ এর স্থলে ৬৫০ হেক্টর ও সোনাগাজীতে ২০ হাজার ৯৭২ হেক্টর লক্ষ্যমাত্রার স্থলে ইতোমধ্যে ৮ হাজার ৫ হেক্টর জমিতে আমন চারা রোপন কাজ শেষ হয়েছে।
ফেনী সদর উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা প্রণব চন্দ্র মজুমদার জানান, গত সপ্তাহে অতিবৃষ্টি শুরু হলে কৃষকদের মাথায় চিন্তার ভাজ পড়ে যায়। এ সময়ে আমনের জন্য তৈরী করা জমি ও বীজতলায় পানি জমে যায়। কিন্তু ২/৪ দিনের মাথায় পানি নেমে যাওয়ায় কৃষকদের মাঝে কিছুটা স্বস্থি নেমে আসে। গত কয়েকদিন আবহাওয়া ভালো থাকায় এখন কৃষকদের দম ফেলার ফুসরত নেই। পরিবেশ অনুকূলে থাকলে আগামী মাসের শুরুর দিকেই আমন চারা রোপন শেষ হবে।ফেনী সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শারমিন আক্তার বিথী জানান, এবার ফেনীতে নতুন জাতের ব্রি-৭১, ৮৭, ৭৯, ৮০, ৯০ ও ৯৫ জাতের ধানের চারা রোপন করছেন। এ জাতের ধান ফেনীতে এবারই প্রথম রোপন করা হচ্ছে। এছাড়াও ব্রি-৪৯, ৫১, ৫২ ও বিআর ২২, ২৩ জাতের ধানও কৃষকরা জমিতে লাগাচ্ছেন। এবার রোপা আমন মৌসূমে শ্রমিক ও পানির তেমন সংকট নেই। যার কারণে কিছুটা দুশ্চিন্তা মুক্ত রয়েছেন ফেনীর কৃষকরা। বৈরী আবহাওয়া মোকাবেলায় জেলায় প্রয়োজনের অতিরিক্ত ৫ ভাগ বীজতলা প্রস্তুুত রয়েছে। আবহওয়া অনুকূলে থাকলে আগস্টের মাঝামাঝি সময়ে ফেনীতে রোপা আমন লাগানো শেষ হবে বলে মনে করেন এ কর্মকর্তা।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ফেনীর উপ-পরিচালক ড. মো. সফি উদ্দিন জানান, ফেনীতে আমন আবাদে কৃষকদের উৎসাহী করতে ২ হাজার ১শ ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষীকে প্রণোদনা দেয়া হয়েছে। প্রণোদনার জন্য নির্বাচিত কৃষকরা বিনামূল্যে ১০ কেজি ডিএপি সার, ৫ কেজি এমপিও সার ও ৫ কেজি হারে আমন বীজ পেয়েছেন। এখন সবাই জমিতে আমন লাগানোর কাজে ব্যস্ত রয়েছে। ইতোমধ্যে জেলায় লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ২৪ ভাগ জমিতে আমন চারা রোপন সম্পন্ন হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে চলতি মৌসূমে জেলায় আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা শতভাগ অর্জিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
শর্ত পূরণ না করায় ফেনীর ৯...
ফেনীর মেধাবী মুখ রিয়ার এড...
চৌদ্দগ্রামে জুয়া খেলার সর...
ছাগলনাইয়ায় অবহেলিত মানু...
Subscribe to our mailing list to get the new updates!