মোঃ কামরুল হাসান: ফেনীতে মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে কিশোর গ্যাং। শুধু ফেনী শহর নয়, এই কিশোর গ্যাং ছড়িয়ে পড়েছে পুরো উপজেলা শহরগুলোতেও। ছোট খাটো তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বেপরোয়া হয়ে উঠে তারা। তাদের এই গ্যাং এর নাম বা সাংকেতিক চিহ্ন লিখে নিজেদের অস্তিত্ব জানান দেয় বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে। সেভেন স্টার, নাইন স্টার, ডিস্কো বয়েজ, গ্যাং স্টার এমন অনেক নাম তাদের। সংশ্øিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বুধবার রাতে ফেনী পৌর শহরের পেট্রোবাংলা এলাকায় দুই গ্রুপ’র মারামারির সময় একটি ভবনের সিসি ক্যামেরায় দেখা যায় কিশোর গ্যাংয়ের দৃশ্য। যাদের হাতে লাঠিসোঁটা দেখা যায় তাদের সবাইর ১৪ থেকে ১৬ বছর বয়সের কিশোর।এছাড়াও উপজেলার মধ্যে ছাগলনাইয়া পৌর শহরের কলেজ রোড় এলাকার বিভিন্ন সড়কে সন্ধ্যার পরই তাদের সক্রিয় অবস্থান দেখা যায়। বিশেষ করে রমজানের শুরু থেকে এখনও প্রতিদিন রাতে তারাবির নামাজের সময় কলেজ রোড়ের কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মসজিদ, আজিজিয়া মাদ্রাসা মসজিদ, থানা পাড়া মসজিদ, সরকারি কলেজ মসজিদের আশেপাশে তাদের আনাগোনা লক্ষনীয়ভাবে দেখা যায়। মসজিদের ভিতরে নামাজ চলা অবস্থায় তারা শোরচিৎকার ও হৈ-হুল্লোড়ে মেতে উঠে। মুসল্লিরা অভিযোগ করে বলেন, নামাজের সময় কিশোরদের শোরচিৎকার ও লাফালাফিতে তাদের নামাজ পড়ায় বিঘœ ঘটে। এসব ছেলেরা বাসা থেকে নামাজ পড়ার কথা বলে বিভিন্ন আড্ডা ও ঝগড়া বিবাদে জড়িয়ে যায়। অভিভাবকরা সচেতন না হয় তাহলে এই কিশোররা ভবিষ্যতের জন্য বিপদগামী হয়ে উঠবে। এছাড়াও সাম্প্রতিক সময়ে জেলার সোনাগাজী, দাগনভূঁঞা, ফুলগাজী, পরশুরামেও কিশোর গ্যাংয়ের অস্তিত্ব লক্ষ্য করা যাচ্ছে।বিভিন্ন উপজেলা শহরাঞ্চলের স্থানীয়রা বলছে, এলাকার বড় ভাই ও স্থানীয় রাজনৈতিক কিছু নেতা মদদ দিচ্ছে এসব কিশোরদের। ব্যবহার করছে নিজেদের স্বার্থ হাসিলের ঢাল হিসেবে। অস্ত্র ও মাদক যোগান দেয়ার অভিযোগও রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। সমাজ বিশ্লেষক সোহেল মোস্তাক বলেন, সামাজিক অবক্ষয় ও সুশাসন না থাকায় বেপরোয়া হয়ে উঠছে কিশোররা। মূলত স্কুল-কলেজের কিছু শিক্ষার্থী আড্ডা দিতে দিতে তৈরি করে এ ধরণের গ্যাং। তারা পাড়া-মহল্লায় দল বেঁধে ঘুরে বেড়ানো, স্কুল-কলেজের সামনে আড্ডা দেয়া, মোটরসাইকেল নিয়ে মহড়া, মেয়েদের উত্ত্যক্ত করা, দল বেঁধে মাদক সেবন, এক স্টাইলে চুল কাটা, টিকটক ভিডিও বানানোসহ বিভিন্ন অপকর্ম করতে গড়ে তুলছে ‘কিশোর গ্যাং’। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে তারা জড়িয়ে পড়ছে প্রাননাশের মতো ঘটনাতে। কিশোরদের এমন আচরণে উদ্বিগ্ন অভিভাবকরা।ফেনীর পুলিশ সুপার খোন্দকার নূরুন্নবী বিপিএম, পিপিএম, বলেন, ফেনীতে কিশোর গ্যাং পূর্বে ছিল এখনও আছে। তবে আগের চেয়ে এখন অনেকটাই নিষ্ক্রিয়। ফেনীর পুলিশ প্রশাসন কিশোর গ্যাং’র ব্যাপারে বিন্দু পরিমাণ ছাড় দিতে রাজি নয়।তিনি আরো বলেন, কিশোরদের পিতামাতাকেও তাদের গতিবিধি লক্ষ্য করা উচিত। তারা কোথায় যায় ? কি করে ? কার সাথে মেলামিশা করে ? সন্ধ্যার সাথে সাথে বাসায় ঢুকে কিনা ? ঠিকমত স্কুলে যায় কিনা ইত্যাদি বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে। পাশাপাশি জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক, সাংবাদিক ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গকেও এ ব্যাপারে এগিয়ে আসতে হবে। প্রতিটি পরিবার নিজ নিজ জায়গা থেকে সচেতন হলে কিশোরদের দ্বারা অসামাজিক কার্যকলাপ আর সংঘটিত হবেনা বলে মনে করেন তিনি।
শর্ত পূরণ না করায় ফেনীর ৯...
ফেনীর মেধাবী মুখ রিয়ার এড...
চৌদ্দগ্রামে জুয়া খেলার সর...
ছাগলনাইয়ায় অবহেলিত মানু...
Subscribe to our mailing list to get the new updates!