মো: কামরুল হাসান: পাহাড়ি জনপদের ২'শ একর জায়গায় আমের চাষ করে লাভবান হচ্ছেন রামগড় উপজেলার সাবেক সহকারী কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ফয়েজ আহমেদ। এক সময় শখের বসে রামগড়ের তৈচাকমা পাহাড়ি অনাবাদি এলাকায় আমের চারা রোপণ করলেও পাহাড়িকা এগ্রো নামের এ বাগানে এখন বানিজ্যিকভাবে আমসহ বিভিন্ন ফলের চাষ করছেন তিনি। অনাবাদি পাহাড়ি টিলায় এখন সারি সারি সব আম, লিচু, কমলা ও মাল্টা বাগান। আমের মধ্যে আম্রপালি, মল্লিকা, ল্যাংরা, গোপালভোগ, মোহনভোগ, সোনালি, কাটিমন, রাঙ্গুইন প্রভৃতি জাতের গাছের থোকায় থোকায় দোল খাচ্ছে আম। ফলের ভারে নুয়ে পড়েছে গাছের ডালপালা। আবহাওয়া ভালো থাকায় পাহাড়ে এবার আম ও লিচুর ভালো ফলন হয়েছে বলে জানান সাবেক এই কর্মকর্তা। সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলার তৈচাকমা এলাকায় নিজের বাগানে আমের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন রামগড় উপজেলার সাবেক সহকারী কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো: ফয়েজ আহমেদ। দৈনিক স্টার লাইন'র প্রতিবেদকের সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, ১৯৮০ সালে চাকুরির সুবাদে ফেনীর ছাগলনাইয়া পৌর শহরের বাঁশপাড়া গ্রাম থেকে রামগড়ে এসে বসবাস করেন। পরবর্তীতে ২০১০ সালের শুরুর দিকে তৈচাকমা এলাকায় প্রথমে ১'শ'৫০ একর অনাবাদি পাহাড়ি টিলায় চুয়াডাঙ্গা ও রংপুর থেকে আম্রপালি, বারি-৪, সোনালি, কাটিমন, রাঙ্গুইন, কিউজাই, বেনানা, মল্লিকা, ল্যাংরা, গোপালভোগ, মোহনভোগ, গৌরমতি, জাতের ২ হাজার আমের চারা এবং লিচু, মাল্টা, কমলা, পেয়ারা ও কলার চারা লাগিয়েছেন। ফলন ভালো হওয়ায় পর্যায়ক্রমে এ পর্যন্ত তার দুটি বাগানের ২'শ একর জায়গাজুড়ে আরো চার হাজার বিভিন্ন জাতের আম, লিচু, মাল্টা, কমলা, কলাসহ বিভিন্ন ফলের চারা লাগান। সবমিলে তার দুটি বাগানে এখন ৬ হাজার গাছের চারা লাগানো হয়েছে। বাগানের গাছ ও ফল নিবিড় পরিচর্যা করার জন্য ১০ জন লোক রেখেছেন। আমকে সতেজ পোকা ও বিষমুক্ত রাখতে কাগজের প্যাকেট দিয়ে মোড়ানো হয়েছে। বাগানে সেচের জন্য শক্তিশালি পাম্প মেশিন বসানো হয়েছে। সোলার প্যানেলের মাধ্যমে বৈদ্যুতিক চাহিদাও পূরণ করা হচ্ছে। এক সময় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আমের চারা ক্রয় করলেও বর্তমানে তিনি নিজেই চারা উৎপাদন করছেন। ফয়েজ আহমেদ আরো বলেন, গত বছর এ বাগান থেকে আম বিক্রি করেছেন ৫০ হাজার কেজি ৩৫ টাকা ধরে ১৭ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার, লিচু লক্ষাধিক টাকার বিক্রি করেছেন। এ বছর লিচু বিক্রি করেন ৩ লাখ টাকার। আম বিক্রি এখনো পুরোপুরি শুরু হয়নি, আগামী সপ্তাহ থেকে শুরু হবে। আবহাওয়া এবং পরিবেশ পরিস্থিতি সবকিছু ঠিক থাকলে এ বছর এক লক্ষ বিশ হাজার থেকে দেড় লক্ষ কেজি আম সব খরচ বাদদিয়ে ৫০ থেকে ৬০ লক্ষ টাকায় বিক্রির আশা করেন। পাশাপাশি চলতি বছর থেকে মাল্টা, কমলা, লেবু ও কলা বিক্রির আশা করছেন। তিনি আরো বলেন, রামগড়, খাগড়াছড়ি, ফেনী, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতারা এসে তার বাগান থেকে ক্যারেটভর্তি আম কিনে নিয়ে যায়। এ আম স্থানীয় চাহিদা পূরন করে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলেও যাচ্ছে। এবছর থেকে তার নিজ জন্মভূমি ছাগলনাইয়াতে আম বিক্রির সেন্টার চালু করার চিন্তা রয়েছে তাঁর। পারিবারিক জীবনে ফয়েজ আহমেদ'র স্ত্রী ও চার ছেলে মেয়ে আছেন। মেয়েদের বিয়ে দিয়েছেন। ছেলেরাও তাঁর এই বাগানগুলো দেখাশোনা করছেন। ফেনী থেকে আম কিনতে আসা মামুন মিনার বলেন, এখানকার পুষ্টিগুনগত রসালো মিষ্টি আমের স্বাদ এবং গন্ধ আসলেই অসাধারণ। ফরমালিনমুক্ত এই আম খেতে খুবই মিষ্টি তাই পরিবারের জন্য এক ক্যারেট রুপালি আম নিয়েছি।
শর্ত পূরণ না করায় ফেনীর ৯...
ফেনীর মেধাবী মুখ রিয়ার এড...
চৌদ্দগ্রামে জুয়া খেলার সর...
ছাগলনাইয়ায় অবহেলিত মানু...
Subscribe to our mailing list to get the new updates!