প্রফেসর মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম: সারাবিশ্বে করোনার দাপট চলছেই। এর লাগাম কেউ ধরতে পারছে না। বিজ্ঞানীরা প্রাণান্তকর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন । কিন্তু এই ভাইরাস বারবার তার রুপ ও অবস্হান পরিবর্তন করে চলেছে। চীনের উহান থেকে এর জন্ম। সারাবিশ্বকে কাঁপিয়ে তুলছে। একেক দেশ থেকে একেক ভ্যারিয়েন্টের উৎপত্তি হচ্ছে। সম্প্রতি ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট আমাদের বাংলাদেশের গ্রামে- গঞ্জে ছড়িয়ে পড়েছে। আবার গতকাল পেরু থেকে ল্যামড়া ভ্যারিয়েন্টের খবর পাওয়া গেল। এটি নাকি চীনা ভ্যাকসিনের প্রাচীর মুহূর্তেই ভেঙ্গে ফেলে।বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এ নিয়ে চরম উৎকন্ঠায় আছে। আমরা বিশ্বাস করি, সকল কিছুর সৃষ্টিকর্তা মহান রাব্বুল আলামিন।এই ভাইরাসেরও সৃষ্টিকর্তা তিনি।তাই তিনিই পারেন এর লাগাম টেনে ধরতে। মানুষের কোন শক্তি নেই। তবে, আমরা সতর্কতা অবলম্বন করতে পারি মহান রাব্বুল আলামিনের ওপর নির্ভর করে। তিনি যদি আমাদের ওপর দয়া করে একে দূরীভূত করেন তাহলে আমরা রক্ষা পেতে পারি।★ সরকার নানাভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য বললেও আমরা বেশীরভাগ মানুষ নির্বিকার। আমরা যদি সবাই নিজের জীবন রক্ষার জন্য কাজ করি তাহলেই সরকারের স্বাস্থ্যবিধি সমাজে শতভাগ কার্যকর হবে। লকডাউন, শাটডাউন' র প্রয়োজন হয় না।আর নিজেকে অন্যের ভাইরাস সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচার উত্তম পন্থা হলোঃ নিজে মাস্ক পরা,অন্যের থেকে দূরত্ব বজায় রেখে চলা,সময়ে সময়ে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করা এবং বারেবার ক্ষারযুক্ত সাবান দিয়ে হাত ধৌত করা।ভ্যাকসিন নেয়ার পূর্ব পর্যন্ত এগুলো বিকল্প হিসেবে কার্যকর বলে জনস্বাস্থ্যবিদদের অভিমত।★ ডিজিটাল যুগে আমরা পদার্পণ করার পরও আমরা অজ্ঞতাকে ধারণ করে আছি।তা হলো অনেকের ধারণা গ্রামের মানুষ ও গরীব মানুষকে করোনা আক্রান্ত করবে না।কিন্তু ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট আসার পর আমাদের গ্রামের মানুষই বেশী আক্রান্ত হচ্ছে। ভাইরাস ধনী-গরিব, ছোট - বড় বুঝে না।তাই গ্রামের সকল মানুষের প্রতি অনুরোধ আমরা একটু কষ্ট হলেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলি।★ আরেকটি সমস্যা আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্হাকে ঝুঁকিতে ফেলছে।তাহলো গ্রামের সাধারণ মানুষ শুরুতেই যথাযথভাবে করোনার চিকিৎসা না নিয়ে সংকটাপন্ন অবস্থায় হাসপাতালে আসে।সময় ক্ষেপনের ফলে অনেকেরই ফুসফুসের বেশীরভাগ অংশ সংক্রমিত হয়ে যায়, অক্সিজেনের মাত্রা নেমে যায়। এতে করে হাসপাতালে এই ধরনের রোগী অধিক হলে অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দেয়। এই জন্য আমাদের উচিত গ্রামে থাকলেও লক্ষ্মণ দেখা দিলে চিকিৎসা শুরু করা। অক্সিজেনের মাত্রা নিম্নমুখী হলে তাড়াতাড়ি হাসপাতালে ভর্তি করা তাতে অধিক সংকটাপন্ন রোগীর চেয়ে এই ধরনের কম সংকটাপন্ন রোগীর জন্য অক্সিজেনের বেশী প্রয়োজন নাও হতে পারে। এতে হাসপাতালের ব্যবস্হাপনাতেও সমস্যা দেখা দিবে না।তাই আমাদের সময় থাকতেই সকল বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। ★ লকডাউন দেয়া হচ্ছে কিন্তু অনেকেই দেখা যাচ্ছে প্রয়োজন ছাড়াই বের হচ্ছে। এতে প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হিমশিম খেতে হচ্ছে। তবে লকডাউন মানার জন্য প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্হাও নিতে হবে।সরকার তা করছেনও।সবচেয়ে বেশী যে বিষয় লক্ষ্মণীয় তাহলো, আমাদের না মানার সংস্কৃতি। এক্ষেত্রে হয়তোবা আমরা জনগণকে সঠিকভাবে বুঝাতে সক্ষম হচ্ছিনা। জনগণকে বুঝতে হবে,আমার জীবনের সুরক্ষা আমাকেই নিশ্চিত করতে হবে। এটি যদি প্রত্যকেই আমরা বুঝি ও মেনে চলি তাহলে লকডাউন শতভাগ সফল হবে। ডাঃ নজরুল ইসলাম স্যারের সাথে আমিও একমত যে,অধিক হারে করোনা টেস্ট করে যারা আক্রান্ত তাদেরকে কঠোর আইসোলেশনে রেখে অন্যদেরকে জীবন ও জীবিকার জন্য স্বাভাবিক চলাফেরার সুযোগ দেয়া যায়। এই প্রক্রিয়া বাস্তবায়নের জন্য প্রত্যেক পাড়া-মহল্লায় রাজনৈতিক নেতাকর্মী, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবক, সমাজকর্মী সকলের অংশগ্রহণ জরুরী। পুরো মহল্লায় চিরুনী অভিযান পরিচালনা করে করোনা রোগী শনাক্ত করে তাদেরকে কঠোর আইসোলেশনে রেখে অন্যদেরকে স্বাভাবিক কাজকর্মের সুযোগ দেয়া যায়। এইভাবে সময়ে সময়ে করোনা পরীক্ষা করে করোনা রোগী সনাক্ত করে ব্যবস্হা নিলে লকডাউনের প্রয়োজন নাও হতে পারে। সাথে সাথে যারা সুস্থ্য তাদেরকে অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে।এই প্রক্রিয়া সারাদেশে একযোগে করা উচিত।আর সকল স্বেচ্ছাসেবককে পাড়ার সকলের মাঝে সচেতনতার জন্য প্রচার অভিযান অব্যাহত রাখতে হবে।( এটি আমার ব্যক্তিগত অভিমত)সমাজের সকলে নিজ থেকে সতর্ক হলে আমরা অনেক মৃত্যু ঝুঁকি কমাতে ইনশাআল্লাহ সক্ষম হবো।★ সামনে মুসলমানদের পশু কোরবানির সময়,এই সময় আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে কোরবানি দেয়ার চেষ্টা করি। অনলাইনে কোরবানির ব্যবস্হা করা হচ্ছে। কেউ বাসাবাড়িতে কোরবানি দিলে সতর্কতা অবলম্বন করবো।কোরবানির বর্জ্য নির্দিষ্ট স্হানে রাখবো। পশুর রক্ত ও ময়লা সাথে সাথে পানি দিয়ে পরিস্কার করে নিতে হবে।★ ঈদের ছুটিতে ছুটাছুটি না করে নিজের এবং নিজের স্বজনদের জীবন সুরক্ষায় এগিয়ে আসি।পরিশেষে, আমিই পারি আমার সতর্কতার মাধ্যমে নিজেকে এবং নিজের স্বজনদের সুরক্ষা দিতে।আল্লাহ আমাদের সহায় হউন। যিনি রোগের সৃষ্টি করেছেন তিনিই আমাদেরকে ক্ষমা করে নিরাময় করতে পারেন।লেখকঃ শিক্ষাবিদ ও গবেষক এবং প্রতিষ্ঠাতা ও চীফ মেন্টর পরিবেশ ক্লাব বাংলাদেশ
শর্ত পূরণ না করায় ফেনীর ৯...
ফেনীর মেধাবী মুখ রিয়ার এড...
চৌদ্দগ্রামে জুয়া খেলার সর...
ছাগলনাইয়ায় অবহেলিত মানু...
Subscribe to our mailing list to get the new updates!