নুর উল্লাহ কায়সার:তিন স্তরের সরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে লোকবল ও প্রয়োজনীয় রোগ নিরীক্ষার সংকট সবচেয়ে বেশি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। ফলে রোগ নিয়ন্ত্রণ ও রোগী ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে তৃণমূলে রয়েছে এর নেতিবাচক প্রভাব। যদিও উপজেলা পর্যায়ের সরকারি এসব হাসপাতালকে মনে করা হয় গ্রামীণ স্বাস্থ্যসেবার প্রধান কেন্দ্র। ক্ষণে ক্ষণে এসব প্রতিষ্ঠানের উন্নতি করতে পদক্ষেপ হিসেবে শুধু শয্যা সংখ্যা বাড়িয়েছে সরকার। তবে সে অনুপাতে বাড়েনি চিকিৎসক, চিকিৎসা উপকরণ। এর মধ্যেও সেবা প্রদানে ভালো করেছে কোনো কোনো উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের র্যাংকিংয়ে উপজেলা পর্যায়ে দেশসেরা হাসপাতালের তালিকায় শীর্ষ স্থান লাভ করে ইতিবাচক আলোচনায় উঠেছে ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। গত বছর চিকিৎসাসেবার মানোন্নয়নসহ সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার কারণে সারা দেশের উপজেলা পর্যায়ে শীর্ষস্থান দখল করেছিল এ প্রতিষ্ঠানটি। দেশের প্রতিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বাস্থ্য সুবিধার পর্যাপ্ততা (ফ্যাসিলিটি স্কোরিং), অনসাইট মনিটরিং (অনলাইন পর্যবেক্ষণ), ফিজিক্যাল ভেরিফিকেশনে (বস্তুগত যাচাই) ও পেশেন্ট স্যাটিসফেকশন (রোগী সন্তুষ্টি) নিয়ে নির্দিষ্ট নম্বরের স্কোরের ভিত্তিতে র্যাংকিং করা হয়। এক্ষেত্রে প্রধানত চিকিৎসা সরঞ্জাম ও যন্ত্রাংশের পর্যাপ্ততা, বহির্বিভাগ, রোগী ভর্তিসহ হাসপাতালের সার্বিক সেবা ও সুবিধা বিবেচনা করা হয়। এক্ষেত্রে অনলাইনের মাধ্যমে অনসাইট মনিটরিংয়ের কাজটি করেন জেলার সিভিল সার্জন। তাদের দেয়া তথ্য যাচাই-বাছাই করতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ‘ফিজিক্যাল ভেরিফিকেশন’ বা সরজমিন পরিদর্শন করা হয়। এক্ষেত্রে মূলত চিকিৎসা যন্ত্রাংশসহ বিভিন্ন সেবা যাচাই করা হয়। এরপর রোগীর সঙ্গে কথা বলে জানার চেষ্টা করা হয়, তারা সেবা নিয়ে সন্তুষ্ট কিনা। এক্ষেত্রে ফ্যাসিলিটি স্কোরে ৮০, অনসাইট মনিটরিংয়ে ২০, বস্তুগত যাচাইয়ে ১৫০ ও রোগী সন্তুষ্টি ৫০ মিলিয়ে মোট ৩০০ নম্বরের ভিত্তিতে সার্বিক ফলাফল প্রকাশ করা হয়। ২০২২ সালে শুধু দুটি বিষয়ের (সুবিধার পর্যাপ্ততা বা ফ্যাসিলিটি স্কোরিং ও অনসাইট মনিটরিং) ভিত্তিতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তালিকা নিজস্ব ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ওই তালিকায় গত বছরের আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে টানা দুই মাস দেশের শীর্ষ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ছিলো ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। হাসপাতাল সংশ্লিষ্টরা জানান, ১৬৬২ সালের দিকে ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলায় স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানটি স্থাপিত হয়। পরবর্তীর্তে নানা সময়ে কর্মপরিধি বাড়িয়ে এর নাম দেয়া হয় উপজেলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। দীর্ঘদিন উপজেলার লাখ লাখ মানুষ এ স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান থেকে সেবা নিয়ে আসছে। বর্তমানে হাসপাতালটিতে আউটডোর সেবা, ইনডোর সেবা, সার্জারী, সিজার, এক্সরে, আল্ট্রাসনোগ্রাম, ইসিজি সেবাসহ ৫০ শয্যার হাসপাতাল কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এছাড়াও হাসপাতালটিতে অতীব গুরুত্বপূর্ণ রোগীদের জন্য ১০ শয্যা বিশিষ্ট্য হাই ডিপেন্ডেন্স ইউনিট (এইচডিইউ) রয়েছে। হাসপাতালে আগত রোগীদের সাথে থাকা বাচ্চাদের খেলাধূলা ও বিনোদনের জন্য স্থাপন করা হয়েছে কিড্স জোন। রয়েছে পুরুষ, মহিলা, শিশু ও গাইনী ওয়ার্ড। স্বল্প পরিসরে রাখা হয়েছে কেবিনও। সরে জমিনে গিয়ে দেখা যায়, স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানটির অবকাঠামোর অবস্থা খুবই নাজুক। হাসপাতালটির দুটি ভবন রয়েছে। পরিত্যাক্ত প্রায় পুরাতন ভবনের নিচ তলায় প্রশাসনিক কার্যক্রম, জরুরী বিভাগ ও স্টোর রুম রয়েছে। দ্বিতীয় তলায় মহিলা ও শিশু ওয়ার্ড, শিশু কর্ণার এবং এইচডিইউর কার্যক্রম চলছে। পেছনে স্থাপিত নতুন ভবনের নিচ তলায় আউটডোর, কনসালটেন্ট কক্ষ, আইসোলেশন ইউনিট রয়েছে। দ্বিতীয় তলায় অপারেশন থিয়েটার, গাইনী বিভাগ ও তৃত্বীয় তলায় কেবিন, এইচডিইউ ও পুরুষ ওয়ার্ড স্থাপন করা হয়েছে।
শর্ত পূরণ না করায় ফেনীর ৯...
ফেনীর মেধাবী মুখ রিয়ার এড...
চৌদ্দগ্রামে জুয়া খেলার সর...
ছাগলনাইয়ায় অবহেলিত মানু...
Subscribe to our mailing list to get the new updates!