২১ নভেম্বর, ২০২৪ || ৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১
নোয়াখালী-৫ আসনে ওবায়দুল কাদের সাথে লড়বেন সাংবাদিক ও ব্যারিস্টার
  • Updated Dec 09 2023
  • / 454 Read

 

এএইচএম মান্নান মুন্না:
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নোয়াখালী-৫ (কোম্পানীগঞ্জ-কবিরহাট) আসনে এবার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন ৫জন প্রার্থী। এরা সবাই রাজনৈতিক দলের ব্যানারে নির্বাচন করার জন্য মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। গত ৩ ডিসেম্বর যাছাই বাছাই পর্বে ৫ জনেরই মনোনয়ন বৈধ বলে ঘোষণা করেন জেলা রিটার্নিং অফিসার। আগামী ১৭ ডিসেম্বরের পরে নির্ধারণ হবে শেষ পর্যন্ত নির্বাচনী লড়াইয়ে কারা থাকছেন।
তবে আলোচনায় আসছে নোয়াখালী-৫ আসনে ওবায়দুল কাদের সাথে নির্বাচনে লড়তে পারেন সাংবাদিক মোকছুদের রহমান মানিক ও ব্যারিস্টার খাজা তানভীর আহমেদ রুবেল। 


স্বাধীনতার পর থেকেই নোয়াখালী-৫ আসনটি ভিআইপি আসন বলে খ্যাত ছিলো। এই আসনে দেশের জাতীয় নেতা হেভিওয়েট প্রার্থী ছিলেন দুজন। সবসময়ে সরকারী দল করা এবং সর্বশেষ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ এবং আজন্ম আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
১৯৭৩ সালের প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ গত ১১টি সংসদ নির্বাচনে এই আসনে সরকারী দল প্রতিনিধিত্ব করেছেন। শুধু ১৯৯১ সালে বিরোধী দলের এমপি ছিলো।
বিগত সময়ের দুই জন হেভিওয়েট নেতার মধ্যে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ মৃত্যু বরণ করেছেন। ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের মৃত্যুর পর নোয়াখালী-৫ আসনের রাজনীতি অনেকটাই একপক্ষীয় হয়ে গেছে। ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের মৃত্যুর পর দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে এ আসনে শুধুমাত্র হেভিওয়েট প্রার্থী আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। 
তবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনে হেভিওয়েট প্রার্থীর তালিকায় রয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য, সড়ক, পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেয়ে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদকে পরাজিত করে প্রথমবার নোয়াখালী-৫ আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সাল থেকে টানা তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
এবারের নির্বাচনে দেশের আরেকটি বড় দল বিএনপি নির্বাচন করছে না। ফলে আসন্ন নির্বাচন অনেকটা ভারসাম্যহীন হবে বলে মনে করছে এলাকার ভোটাররা।
নোয়াখালী-৫ আসনে ওবায়দুল কাদেরের সাথে আসন্ন সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন কেবল আরেকজনই রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। তিনি হচ্ছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের কেন্দ্রীয় নেতা জাতীয় পরিষদ সদস্য ও নোয়াখালী জেলা জাসদের সাবেক সেক্রেটারী সাংবাদিক মোহাম্মদ মকছুদের রহমান মানিক।
তিনি কোম্পানীগঞ্জ সদর বসুরহাটেই বেড়ে উঠেছেন। সাবেক ছাত্রনেতা। ১৯৮১ সালে স্কুল জীবনে রাজনীতির দীক্ষা নেন তিনি। পরে সরকারী মুজিব কলেজের জাসদ সমর্থিত ছাত্রলীগের সেক্রেটারি ছিলেন। তারপর উপজেলা, জেলা ও কেন্দ্রে ছাত্র রাজনীতি করেছেন। এরপর ১৯৯১ থেকে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত বসুরহাট পৌর জাসদের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। পরে তিনি ঢাকামহানগর জাসদ এবং জাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির একাধিক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন।
নোয়াখালী-৫ আসনের জাসদের প্রার্থী মোহাম্মদ মকছুদের রহমান মানিক পেশায় একজন সাংবাদিক। তিনি জাতীয় পাক্ষিক নোয়াখালী মেইল, সাপ্তাহিক আজকের যোগাযোগ এবং দৈনিক আপন কাগজ পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
ফলে রাজনীতি সাংবাদিকতাসহ নানাদিকে থেকেই নোয়াখালী-৫ আসনে জাসদের মশাল প্রতীকের প্রার্থী মোহাম্মদ মকছুদের রহমান মানিক এর জন্য উর্বর মাটি বটে।
এছাড়াও এই আসনে সদ্য রাজনীতিতে যোগদানকারী ও জাপার কেন্দ্রীয় সদস্য খাজা তানভীর আহমেদ রুবেলও আলোচনায় রয়েছেন। তিনি পেশায় একজন আইনজীবী।
খাজা তানভীর আহমেদ রুবেল একজন তরুণ ব্যারিস্টার। বয়স ত্রিশাদ্ধ। কখনও ছাত্ররাজনীতি বা জাতীয় রাজনীতি কনেনি।  তার পিতা খাজা আবুল খায়ের প্রয়াত ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের অনুসারি ছিলেন। পরে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা জাতীয় পার্টির সাবেক সভাপতি ছিলেন। সেই সুবাদে খাজা তানভীর আহমেদ রুবেল জাপার কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হয়ে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। তিনি স্থানীয় রাজনীতি ও ভোটারদের কাছে এমন পরিচিতি না থাকলেও  দলীয় সিদ্ধানে নাঙ্গল প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করবেন।
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নোয়াখালী-৫ আসনে হেভিওয়েট প্রার্থী আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের মূল প্রতিদ্বন্ধি হতে পারেন জাসদের মশাল প্রতীকের প্রার্থী মোহাম্মদ মকছুদের রহমান মানিক ও জাতীয় পার্টির নাঙ্গল প্রতীকের দলীয় প্রার্থী তরুণ ব্যারিস্টার খাজা তানভীর আহমেদ রুবেল।


এছাড়াও একবারে নতুন রাজনৈতিক পরিচয়হীন আরো ২ জন প্রার্থী রয়েছেন এই আসনে। তারা হলেন- ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের (আইএফবি) মোহাম্মদ শামছুদ্দোহা এবং বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের (মুক্তিজোট) শাকিল মাহমুদ চৌধুরী।
এই পাঁচজন প্রার্থীর মধ্যে রাজনৈতিক-অরাজনৈতিক মহলে প্রথমোক্ত দুজনের পরিচিতি থাকলেও অপর তিনজন প্রার্থীর তেমন একটা জনসম্পৃক্ততা ও পরিচিতি নেই এমনকি আত্মীয় স্বজনরা ছাড়া তাদেরকে অধিকাংশ ভোটার চেনেন না। ভোট আসন্ন দু'জনের নাম শুনেছেন।
এবার নোয়াখালী-৫ (কোম্পানীগঞ্জ-কবিরহাট) আসনে ১৩২টি ভোট কেন্দ্রে মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৫ হাজার ৭১৫জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ১০ হাজার ৩৮৮ জন, মহিলা ১ লাখ ৯৫ হাজার ৩২৭জন ভোটার রয়েছেন।

Tags :

Share News

Copy Link

Comments *