২১ নভেম্বর, ২০২৪ || ৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১
ফেনীর ছাগলনাইয়ায় সোহেল ও মোস্তফা গ্রুপ মুখোমুখি
  • Updated Jan 27 2024
  • / 1546 Read

ছাগলনাইয়া প্রতিনিধি: ছাগলনাইয়ায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক মেজবাউল হায়দার চৌধুরী সোহেল গ্রুপ এবং পৌর মেয়র ও পৌর আ’লীগের সভাপতি এম. মোস্তফা গ্রুপের মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এক পক্ষের সাথে অন্য পক্ষের হামলা, পাল্টা হামলা ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার বিকেলে পৌর শহরের থানা পাড়া এলাকায়। জানা যায়, থানা পাড়া এলাকার একটি ফার্ণিচার দোকানদারের কাছে কয়েকজন ব্যক্তি টাকা পেতো। সে দোকানদার দীর্ঘদিন থেকে ফার্নিচার তৈরি জন্য অগ্রীম টাকা নিয়ে অর্ডার নিতেন। কিন্তু সময়মতো অর্ডারকৃত মালামাল ফেরত দিতো না। এছাড়াও দোকানদার ঘরে ভাড়াও দিচ্ছিলো না। এ নিয়ে দোকানঘরের মালিক পক্ষ ও প্রতারিত হওয়া কাস্টমাররা স্থানীয় কাউন্সিলরকে ঘটনাটি অবহিত করেন। কাউন্সিলর বিষয়টি মিমাংশা করতে ঘটনাস্থলে যায়। 

এসময় কাজী নুরুন নবী নামীয় এক ব্যক্তি দোকানদারের কাছে ৫ হাজার টাকা পাবেন বলে দাবী করেন। কাউন্সিলর মোজাহারুল ইসলাম মুছা উপস্থিত থেকে দোকান ঘরটি খালি করার সময় কাজী নুরুন নবী বিষয়টি মোবাইল ফোনে রেকর্ড করতে থাকেন। ভিডিও রেকর্ড করতে কাউন্সিলর মুছা বাধা প্রদান করেন। এসময় কাজী নুরুন নবী কাউন্সিলরকে নাজেহাল করে চড় থাপ্পড় মারেন। এতে দুই পক্ষের মাঝে হাতাহাতি শুরু হয়। এক পর্যায়ে ঘটনাস্থলে ছাগলনাইয়া থানার পুলিশ উপস্থিত হন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে উভয় পক্ষকে শান্ত থাকার অনুরোধ করা হয়। সৃষ্ট সমস্য সমাধানের জন্য বিষয়টি ২/১দিনের মধ্যে উপজেলা চেয়ারম্যান ও পৌর মেয়র বসে সমাধান করবে বলে পুলিশ জানায়। ঘটনার দিন রাতেই উভয় পক্ষ সৃষ্ট সমস্যার প্রতিকার চেয়ে থানায় পাল্টাপাল্টি মামলা করেন। ছাগলনাইয়া থানায় কাজী নুরুন নবী বাদী হয়ে কাউন্সিলর মোজাহারুল ইসলাম মুছাকে প্রধান আসামী করে ৮ জনের নাম উল্লেখপূর্বক ২৫/৩০ জনকে অজ্ঞাত রেখে একটি অভিযোগ দায়ের করে। অপর দিকে যুবলীগ নেতা মোঃ ইমাম হোসেন বাদী হয়ে কাজী নুরুন নবীকে প্রধান আসামী করে ৫ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ৫/৬ জনকে অজ্ঞাত রেখে পাল্টা অভিযোগ দায়ের করে। রাতেই বিষয়টি আরো উপ্তত্ত হয়ে পড়ে। কাউন্সিলর মুছা উপজেলা চেয়ারম্যানের লোক এবং কাজী নুরুন নবী পৌর মেয়র এম. মোস্তফার ভাগ্নি জামাতা হয়। ফলে বিষয়টি রাজনৈতিক গ্রুপিংয়ে চলে যায়। অন্যদিকে ২৫ জানুয়ারী বিকেলে ৩০/৩৫ জনের একদল যুবক থানা পাড়ায় কাজী নুরুন নবীর বাসার সামনে আসে। তখন পৌর মেয়র এম. মোস্তফা ও তার সাথে থাকা লোকজন যুবকদের ধাওয়া করে। এসময় সবাই পালিয়ে গেলেও ৩ জনকে মোস্তফার লোকেরা ধরে ফেলে। পরে আটকৃত যুবকদের অজ্ঞাত এক বাসায় নিয়ে অমানবিক ভাবে পিটানো হয়। এরপর আহত যুবকদের পুলিশের হাতে তুলে দেয় মেয়র এম. মোস্তফা। আকটকৃতরা হলো, ফেনী জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মোঃ আইয়ুব চৌধুরী, ছাগলনাইয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ আশ্রাফ, ঘোপাল ইউনিয়ন ছাত্রলীগ নেতা মোঃ জহিরুল ইসলাম শাকিল। আকটকৃতদের স্বজনরা জানান, আমাদের ছেলেরা ঘটনাস্থলে মারামারি করতে কিংবা কারো পক্ষ নিয়ে যায় নি। 

মেয়র মোস্তফা অন্যায়ভাবে আমাদের ছেলেদের বেদড়ক পিটিয়েছে। তারা অন্যায় করলে পুলিশি তদন্তে বেরিয়ে আসবে। এতে আমাদের আপত্তি নাই। তবে তাদের রাজনৈতিক পরিচয় জানার পরেও পুলিশে দেওয়া দুঃখজনক। শুধু তাই নয়, ভাইরাল হওয়া এক ভিডিওতে দেখা ও শুনা যায়, মেয়র মোস্তাফা ও তার লোকজন আটককৃতদেরকে গান ও পকেটে ইয়াবা ঢুকিয়ে দিতে। এ সময় ফ্লোরে কয়েকটি ইয়াবা পড়ে থাকতে দেখা যায়। উক্ত ঘটনাটির একটি ভিডিও ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক ভাইরাল হয়েছে। এ বিষয়ে পশ্চিম ছাগলনাইয়ার থানা পাড়ার বাসিন্দা আবদুর রহিম জানান, বিষয়টি খুবই ক্ষুদ্র ছিল কিন্তু রাজনীতিভাবে একে অন্যকে ঘায়েল করার জন্য এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনাটি ঘটানো হয়েছে। এ বিষয়ে ছাগলনাইয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ হাসান ইমাম জানান, সৃষ্ট ঘটনায় পুলিশ সচেষ্ট থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করেছে। বড় ধরণের কোনো ঘটনা ঘটেনি। উভয় পক্ষ সৃষ্ট ঘটনায় মামলা দায়ের করেছে। আটককৃত ৩ জনকে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থাগ্রহনের জন্য আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

Tags :

Share News

Copy Link

Comments *