কোকিল কন্ঠী গায়িকা বিপাশা গানই যার ধ্যান জ্ঞান!
- Updated Dec 29 2023
- / 437 Read
বিনোদন প্রতিবেদক:
"বিপাশা রায়"একজন স্কুল শিক্ষক ও গৃহিনী। চিরাচরিত আটপৌরে বাঙ্গালী ঘরানার নারীরা এই পরিচয়ে দারুন খুশি। চাকুরী, স্বামী, সংসার ও সামাজিকতা রক্ষা করতে করতে প্রায় সকলেই হাঁপিয়ে উঠেন। সৃষ্টিশীল, সৃজনশীল কর্মে মেধার বিকাশ ঘটানোর সময় কই? এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম বিপাশা রায়। হাঁপিয়ে ওঠা কিংবা দমে যাওয়ার পাত্রী নন তিনি। নিজের যোগ্যতা, দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার ষোলকলা পূর্ণ করে তা বিলিয়ে দিতে নিয়েছেন অভিভাবকত্ব। গড়েছেন ‘তুলির ছোয়া সাংস্কৃতিক কেন্দ্র’ নামে সংগঠন।
পাহাড়ের পাদদেশে দাঁড়িয়ে পাহাড়ের উচ্চতম শিখরে আরোহণের স্বপ্ন দেখতেন বিপাশা। স্বপ্ন শুধু স্বপ্ন নয়, স্বপ্নকে জয় করে আজ তিনি পাহাড়ের উচ্চতম শিখরের দূর্জেয় অভিযাত্রী। কথায় বলে-‘যিনি রাঁধেন, তিনি চুলও বাঁধেন’।
ফেনী সদর উপজেলার বালিগাঁও ইউনিয়নের বেঁতাগাও এর মেয়ে বিপাশা। ‘স্বর্গীয় পিতা বিমল রায়’ ও ‘মাতা মুনমুন রায়’ এর অনুপ্রেরণায় সংগীতের বিশাল সাম্রাজ্যের ছোট্ট সারথী হয়ে পথ চলতে শুরু করেন। সংগীতে বিপাশার হাতেখড়ি ‘মিসেস সীমা নাথ’ এর কাছে এবং চিত্রাংকনে হাতে খড়ি ‘সুব্রত নাথ’র কাছে। তবে সঙ্গীত গুরু ওস্তাদ অজয় দাস ও দোলন দাসের নিবিড় প্রশিক্ষনে এবং অনুপ্রেরণায় ছোট বিপাশা সময়ের সাথে নিজেকে এগিয়ে নিতে এবং এগিয়ে দিতে ওস্তাদের প্রতিটি তাল, লয়, সূর ও ছন্দের ঝংকারকে উপাস্য মনে করে পথ চলতে থাকেন। "ছায়ানট সঙ্গীত বিদ্যায়তনে "নজরুল সংগীতের" উপর কোর্স কমপ্লিট করে বর্তমানে "উচাঙ্গ বা শুদ্ধ সঙ্গীত" চর্চায় রত আছেন। তার বর্তমান সঙ্গীত গুরু অসিত দে একজন উচ্চ মার্গের সংগীত সাধক। রপ্ত করেন সংগীতের শাখা প্রশাখার নানান দিক। সংগীত যার রক্তে, তাকে দাবিয়ে রাখার সাধ্য কার!! নিজের সৃজনী শক্তি প্রয়োগ করে প্রতিটি নান্দনিক ও সৃষ্টিশীল কাজকে নিজস্ব ঢঙ্গে উপস্থাপন করে সময়ের চাহিদা মেটাতে পারঙ্গম বিপাশা। "ইঞ্জিনিয়ার স্বামী রনি বনিক’র আগ্রহ ও অনুপ্রেরণা বিপাশার উদ্যম আরো বাড়িয়ে দেয়। রক্ষণশীল সনাতন ধর্মের অনুসারী বিপাশা ধর্মান্ধ নয়। আধুনিক ধ্যান-ধারনার বাহক বিপাশা মানবতাকে লালন করেন অন্তরে। ধনু রাশির জাতিকা বিপাশা একজন আদর্শ শিক্ষক হিসাবে নিজের যোগ্যতার প্রমাণ দিতে সক্ষম হয়েছেন।"পশ্চিম সোনাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়" স্কুলে প্রথম যোগদান, বর্তমানে "ফেনী পিটিআই পরিক্ষণ বিদ্যালয়ে কর্মরত আছেন। ছোট ছোট সোনামনিদের মাতৃ স্নেহে দরদ দিয়ে অজানাকে জানার সুযোগ করে দেন বিভিন্ন কার্যক্রমের মাধ্যমে। কোমলমতি ছাত্র ছাত্রীদের প্রিয় ম্যাডাম বিপাশার গুণের এখানেই শেষ নয়। তিনি একজন সৌখিন আঁকিয়ে। মনের মাধুরী মিশিয়ে রং তুলির ক্যানভাসে, দেয়ালে দেয়ালে আপন মনে সৃষ্টি করেন শিল্পের অকথিত কাহন। রং তুলির দুনিয়ায় বিপাশার ক্যাম্পাসে চলে রংয়ের খেলা। শিশুদের চিত্রাংকন ও সঙ্গীত শেখানোতে বিপাশা খুবই আনন্দ পান।
"তুলির ছোঁয়া" হ্যান্ড পেইন্টিং পেইজে ছোট বোন চৈতি রায়সহ কাজ করেন বিপাশা। হাসি, কান্না, দূঃখ-বেদনা, আর বিরহী প্রেমের উপাখ্যান জাগ্রত হয় তার কোমল হাতের তুলির ছোঁয়ায়। বিপাশার সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘তুলির ছোঁয়া’ এর নামকরণেই তা সহজেই উপলদ্ধি করা যায়।
স্মার্ট, প্রিয়দর্শিনী ও সুহাসিনী বিপাশার টোলপড়া গাল নাটোরের বনলতা সেনের কথা মনে করিয়ে দেয়। হৃদয়ের গভীর ভিতরে ভাললাগার আবেশের সম্মোহন জাগায় বিপাশা সঙ্গীতের ঝংকারে। সংগীত যখন শ্রোতার মনে আসন গাড়ে তখন শিল্পী হয়ে যায় কালোত্তীর্ণ। শৈল্পিক মুদ্রা প্রদর্শনকালে প্রিয়দর্শিনী বিপাশাকে সাক্ষাত স্বর্গের অস্পরীর মতো দেখায়। এই যেন সষ্ট্রার অপূরূপ সৃষ্টি। একেই অঙ্গে এতো রূপ স্রষ্টা তার এক সৃষ্টিকে দান করে তার রহস্যময়তার পরিচয় দিয়েছেন। এজন্যই বোধহয় কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ বলেছিলেন, তুমি কেমন করে গান করো হে গুণী,আমি অবাক হয়ে শুনি, শুধুই শুনি। ‘ফেনীর সংস্কৃতিকে এগিয়ে নিতে প্রচার বিমুখ বিপাশাদের বাঁচিয়ে রাখার বিকল্প নাই’।
Share News
-
সর্বশেষ সংবাদ
-
সর্বাধিক পঠিত