২১ নভেম্বর, ২০২৪ || ৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১
সোনাগাজীতে মৎস্য কর্মকর্তার গাড়ী ভাংচুর!
  • Updated Nov 25 2023
  • / 476 Read

 

★ ইউএনও-ওসির হস্তক্ষেপে সমাধান


সোনাগাজী প্রতিনিধি:  
সোনাগাজীতে বিহনতি জাল জব্দ করে আগুন ও কেটে নদীতে ভাসিয়ে দেয়ার প্রতিবাদে জেলা মৎস্য কর্মকর্তার গাড়ী ভাংচুর ও কর্মকর্তাদের লাঞ্চিত করেছে বিক্ষুব্ধ জেলেরা। বৃহস্পতিবার বিকালে এই ঘটনা ঘটে। 
এ সময় গাড়ীতে ফেনী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিল্লাল হোসেন, উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা তুর্য সাহাসহ মৎস্য দপ্তরের লোকজন উপস্থিত ছিলেন।
জেলেরা অভিযোগ করেন, উপজেলা মৎস্য অফিসের লোকজন তাদের কাছ থেকে পরিবার প্রতি এক হাজার টাকা করে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছেন। চাঁদা দিতে অপারগতা দেখানোয় অতর্কিত অভিযান চালিয়ে ৪০টির মত জাল কেটে নদীতে ভাসিয়ে দেয় এবং ৫টির মত আগুনে পুড়িয়ে দেয়। প্রতিবাদ করলে কয়েকজন জেলেকে মারধোর করা হয়। 


এই ঘটনায় বিক্ষুব্ধ জেলেরা জেলা মৎস্য কর্মকর্তার ব্যবহৃত গাড়ি ভাঙচুর করেছেন। পরে বিকেল ৪টার দিকে বিক্ষুব্ধ জেলেরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় ঘেরাও করে জালের ক্ষতিপূরণ দাবি করেন।
ক্ষতিগ্রস্ত জেলে, প্রত্যক্ষদর্শী, পুলিশ ও মৎস্য কর্মকর্তারা জানান, দুপুর ২টার দিকে জেলা ও উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে বড় ফেনী নদীর চরখোন্দকার মোহনায় অভিযান চালিয়ে নৌকায় থাকা ৩০-৪০টি বিহনতি জাল জব্দ করা হয়। দুটি জাল আগুনে পুড়ে দেওয়া হয় এবং বেশ কয়েকটি জাল কেটে নদীতে ফেলে দেওয়া হয়। 
এ খবরটি চরখোন্দকার জলদাস পাড়ায় ছড়িয়ে পড়লে জেলেরা দলবদ্ধ হয়ে শাহাপুর বাজারে গিয়ে জেলা ও উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার গাড়ির গতিরোধ করে হামলা চালায়। এসময় দুই মৎস্য কর্মকর্তা ও তাদের সঙ্গীদের সঙ্গে জেলেদের হাতাহাতি হয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শাস্ত করে দুই মৎস্য কর্মকর্তাসহ তাদের সঙ্গীদের উদ্ধার করেন।
ঘটনার পরপর দুই শতাধিক জেলে ইউএনও অফিসের সামনে এসে বিক্ষোভ করেন। ইউএনও কামরুল হাসান বিষয়টি নিয়ে সন্ধ্যায় সোনাগাজী মডেল থানায় ওসি, জেলে নেতা ও মৎস্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে একটি সমঝোতা বৈঠক করেন।  


জেলেদের সর্দার প্রিয়লাল জলদাস বলেন, উপজেলা মৎস্য অফিসের কর্মচারী রাজুর মাধ্যমে জেলা ও উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তারা জেলেদের কাছ থেকে কয়েকদিন ধরে মাথাপিছু এক হাজার টাকা করে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছেন। দাবিকৃত চাঁদা না পেয়ে হঠাৎ করে বিনা নোটিশে নিরীহ জেলেদের জালগুলো জব্দ করেন। পরে আগুনে পুড়ে ও কেটে নদীতে ধ্বংস করে দেন। জেলেরা ঋণের কিস্তি নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েন। জেলেদের দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। জালের ক্ষতিপূরণ না পেলে বৃহত্তর আন্দোলনে যাবেন জেলেরা।
জেলে সর্দার জগদ্বীশ জলদাস বলেন, ঋণের কিস্তি নিয়ে আমরা জেলেরা দিশেহারা হয়ে পড়েছি। জালের ক্ষতিপূরণ না পেলে আমরা আন্দোলন করবো। 
জেলা ও উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিল্লাল হোসেন ও তুর্য সাহা বলেন, বিহনতি জাল জব্দ করায় বিক্ষুব্ধ জেলেরা তাদের গাড়ী ভাংচুর করে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুল হাসান বলেন, বিষয়টি সমাধানে জেলে নেতা ও মৎস্য কর্মকর্তাদের নিয়ে বৈঠক হয়েছে। সোনাগাজী মডেল থানার ওসি হাসান ইমাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

Tags :

Share News

Copy Link

Comments *