সোনাগাজীতে শিশু ছাত্রী কে যৌন হয়রানি সত্যতা পেয়েছে তদন্ত কমিটি
- Updated Oct 03 2023
- / 159 Read
সোনাগাজী প্রতিনিধি:
সোনাগাজীতে প্রধান শিক্ষক নারায়ন চন্দ্র রায় কর্তৃক পঞ্চম শ্রেণীর শিশু ছাত্রীর সাথে যৌন আচরণের সত্যতা পেয়েছে উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটি।
সোমবার সকালে তদন্ত কমিটির প্রধান ও উপজেলা আনসার ভিডিপি অফিসার রাবেয়া সুলতানা নাজমা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তিনি স্কুলের সভাপতি, শিক্ষক বৃন্দ, ভিকটিম ছাত্রী ও স্থানীয় মানুষজনের বক্তব্য নেন।
এসময় চরচান্দিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন মিলন, তদন্ত কমিটির সদস্য ও সহকারি শিক্ষা অফিসার ওয়াহিদুর রহমান, স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি আবু সুফিয়ানসহ স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তি বর্গ উপস্থিত ছিলেন।
তদন্ত কমিটির কার্য্যক্রম সম্পর্কে জানতে ফোন করলে কমিটির আহবায়ক রাবেয়া সুলতানা নাজমা জানান, প্রধান শিক্ষক নারায়ন চন্দ্র রায়ের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে তদন্ত কমিটি। আমরা প্রধান শিক্ষকের সহকর্মী শিক্ষকবৃন্দ, স্কুল সভাপতি, ভিকটিম ছাত্রী, অভিবাবকসহ বিভিন্ন মানুষ জনের থেকে পৃথক পৃথক ভাবে বক্তব্য নিয়েছি। এখনি সবকিছু বলতে পারছিনা। প্রতিবেদন জমা হলে সবকিছু জানতে পারবেন।
উল্লেখ্য, রবিবার সকালে ছাত্রী কে যৌন হয়রানির অভিযোগে উপজেলার চরচান্দিয়া ইউনিয়নের সুলতান আহম্মদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নারায়ন চন্দ্র রায় কে অবরুদ্ধ করে তার বিচার দাবীতে শ্লোগান দেন এলাকা বাসী।
খবর শুনে সহকারি প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ওয়াহিদুর রহমান কে নিয়ে ঘটনাস্থলে যান উপজেলা নির্বাহি অফিসার কামরুল হাসান। এসময় তিনি ভিকটিম ছাত্রী, শিক্ষক ও অভিবাবক সহ স্থানীয়দের সাথে কথা বলে ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা পেয়ে তদন্ত কমিটি গঠন ও প্রতিবেদন না আসা পর্যন্ত অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক নারায়ন চন্দ্র রায় কে পাঠদান থেকে অব্যহতির নির্দেশ দেন।
নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, এর আগে ২০১৩ সালে চরচান্দিয়া নাসির উদ্দিন লন্ডনী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থাকা কালে দুই ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠে। ক্ষতিগ্রস্থরা তৎকালীন ইউএনওর কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলেন। বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে অভিযুক্ত নারায়ন কে বদলী করে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস।
এরপর ২০১৬ সালে পশ্চিম চরচান্দিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের থাকা কালে তার বিরুদ্ধে আবারো কয়েকজন ছাত্রী কে যৌন হয়রানির অভিযোগ এনে উপজেলা শিক্ষা অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও চরচান্দিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন। পরে অভিযোগ প্রমানিত হলে তাকে শাস্তিমূলক বদলী করা হয়।
উপজেলা নির্বাহি অফিসার কামরুল হাসান বলেন, আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছি। সবার সাথে কথা বলেছি। এই ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রতিবেদন না আসা পর্যন্ত অই শিক্ষক কে পাঠদান থেকে অব্যহতির জন্য বলেছি।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জহির উদ্দিন মাহমুদ লিপটন বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশু শিক্ষার্থীদের সাথে যৌন আচরণ অত্যন্ত জঘন্য অপরাধ। শিক্ষকতার মহান পেশার আড়ালে যদি কেউ এমন করে তাহলে অবশ্যই তার কঠিন শাস্তি চাইবো আমি।
অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক নারায়ন চন্দ্র রায় তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার বিরুদ্ধে আমার কয়েকজন সহকর্মি ও স্থানীয় মানুষ অপপ্রচার ও ষডযন্ত্র করছে। যেহেতু তদন্ত চলছে তাই আমি বেশিকিছু বলবোনা। আমি আশা করি তদন্তে প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসবে।
Share News
-
সর্বশেষ সংবাদ
-
সর্বাধিক পঠিত