মিরসরাই শিল্প নগরীতে কাশফুলের সাথে নীল আকাশের মিতালী
- Updated Oct 17 2023
- / 470 Read
শিহাব উদ্দিন শিবলু;
শরৎ মানেই কাশফুল। আর কাশফুল মানেই অন্তহীন নীল আকাশ। আকাশ মানেই মুক্ত বিহঙ্গের মতো ডানা মেলে উড়াউড়ি।
যুগে যুগে শরতের শুভ্র কাশফুলের অপরূপ সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়েছেন প্রকৃতিপ্রেমীরা। কাশফুলে শুভ্রতা পুলকিত করে না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দায়। তাই কাশফুলের শুভ্রতায় মেতে উঠেছেন বাংলাদেশের বৃহৎ শিল্প অঞ্চল চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার ইকোনমিক জোনের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে থাকা কাশবনে। যান্ত্রিক জীবনের কোলাহল মুক্ত পাশেই নদীর কলতান, সাদা মেঘ ও কাশফুলের মিতালী উপভোগ করতে প্রতিদিনই ওই কাশবনে ভিড় করছেন অসংখ্য প্রকৃতিপ্রেমী নানা বয়সের মানুষ।
শনিবার (১৪ অক্টোবর) বিকেলে সারেজমিনে দেয়া যায়, বঙ্গোপসাগর ঘেঁষেই গড়ে উঠছে শিল্প নগরী। তাই ছুটির দিনে জোন এলাকায় সাগর পাড়ে দেখতে আসছেন অনেক দর্শনার্থী। সাগর দেখতে এসেই উপহার হিসেবে পাচ্ছেন কাশফুলের বন, আর এমন প্রাকৃতিক দৃশ্য হাতছাড়া না করে নেমে পড়ছেন ছবি তুলতে।
ছবি তুলতে আসা আলাউদ্দিন জানান, অনেকদিন ধরে শিল্প নগর ঘুরতে আসতে চাচ্ছিলেন, তাই বন্ধুরা মিলে ছুটির দিনে অহেতুক না কাটিয়ে এসেছেন শিল্প নগরীর সাগর পাড়ে বেড়াতে। তবে সাগর পাড়ের পাশেই কাশফুলের বন দেখে আর লোভ সামলাতে না পেরে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন ছবি তুলতে।
দর্শনার্থী তানজিলা জানান- শিল্প নগরী, বঙ্গোপসাগর পাড় আর নীল আকাশের সাথে কাশফুলের মিতালি যেন এক মায়ার বাঁধনে বেঁধে পেলেছে। ইচ্ছে করছে যেনো থেকে যাই এই অপরূপ মায়ায়।
হাবিবুর রহমান জানান, সীতাকুণ্ড থেকে শিল্প নগরীতে ঘুরতে এসেছি। সাগর পাড়ে যাওয়ার পথে চোখে পড়লো কাশফুলের বন। তাই আর দেরি না করে ছবি তুলতে নেমে পড়লাম। শেষ বিকেলের সূর্যের সাথে কাশফুলের দৃশ্য অনেক মুগ্ধ করেছে। এযেন একে ভেতর দুই।
তাইতো কাশফুলের মুগ্ধতা নিয়ে কবি নির্মলেন্দু গুণ বলেছেন,
ভেবেছিলাম প্রথম যেদিন ফুটবে তোমায় দেখব,
তোমার পুষ্প বনের গাঁথা মনের মত লেখব।
তখন কালো কাজল মেঘ তো ব্যস্ত ছিল ছুটতে,
ভেবেছিলাম আরো ক'দিন যাবে তোমার ফুটতে।
সবে তো এই বর্ষা গেল শরত এলো মাত্র,
এরই মধ্যে শুভ্র কাশে ভরলো তোমার গাত্র।
ক্ষেতের আলে নদীর কূলে পুকুরের ওই পাড়টায়,
হঠাৎ দেখি কাশ ফুটেছে বাঁশ বনের ওই ধারটায়।
আকাশ থাকে মুখ নামিয়ে মাটির দিকে নুয়ে,
দেখি ভোরের বাতাসে কাশ দুলছে মাটি ছুঁয়ে।
কিন্তু কখন ফুটেছে তা কেউ পারে না বলতে,
সবাই শুধু থমকে দাঁড়ায় গাঁয়ের পথে চলতে।
উচ্চ দোলা পাখির মত কাশ বনে এক কন্যে,
তুলছে কাশের ময়ূর চূড়া কালো খোঁপার জন্যে।
শরত রানী যেন কাশের বোরখা খানি খুলে,
কাশ বনের ওই আড়াল থেকে নাচছে দুলে দুলে।
প্রথম কবে ফুটেছে কাশ সেই শুধুরা জানে,
তাইতো সেটা সবার আগে খোঁপায় বেঁধে আনে।
ইচ্ছে করে ডেকে বলি, "ওগো কাশের মেয়ে―
আজকে আমার চোখ জুড়ালো তোমার দেখা পেয়ে
তোমার হাতে বন্দী আমার ভালোবাসার কাশ
তাইতো আমি এই শরতে তোমার কৃতদাস"
ভালোবাসা কাব্য শুনে কাশ ঝরেছে যেই
দেখি আমার শরত রানী কাশবনে আর নেই
Share News
-
সর্বশেষ সংবাদ
-
সর্বাধিক পঠিত