এস.এন আবছার: সোনাগাজী উপজেলার বগাদানা ইউনিয়নের আলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শ্রেণি কক্ষের অভাবে ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান। নেই কোনো খেলার মাঠ। বিদ্যালয়ে এসে শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। আরেকটি ক্লাস হলেই তারা শ্রেণিকক্ষে প্রবেশের সুযোগ পায়। কারণ মাত্র দুটি শ্রেণিকক্ষ নিয়ে চলে বিদ্যালয়টির শিক্ষা কার্যক্রম। ফলে পাঠদান ব্যাহত হওয়াসহ নানা সমস্যায় ভুগছে বিদ্যালয়টি। যার কারনে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বাধ্য হয়ে শিফট করে পাঠদান করে আসছে।
সরেজমিন অনুসন্ধানে দেখা যায়, বিদ্যালয়ে শ্রেণিকক্ষ মাত্র ২টি। এই ২টি কক্ষের মাঝখানে বেড়া দিয়ে চারটি রুম বানানো হয়েছে। বিদ্যালয়টিতে ৬জন শিক্ষক ও ১৮৩ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। একটি কক্ষে শিক্ষকেরা দাপ্তরিক কাজ করছেন, অন্য তিনটি কক্ষে শিশু থেকে পঞ্চম পর্যন্ত ছয়টি শ্রেণির পাঠদান করা হচ্ছে। জায়গার সংকুলান না হওয়ায় কোমলমতি শিশুদের বসতে হচ্ছে গাদাগাদি করে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৪৮ সালে আলামপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা হয়। ২০১৩ সালে ৪কক্ষ বিশিষ্ট পুরোনো ভবন পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। এরপর থেকে নতুন ভবনের দুটি কক্ষকে চারটি অংশে ভাগ করে তিনটিতে পাঠদান এবং একটিতে অফিস কক্ষ বানানো হয়েছে।বিদ্যালয়ের মূল ফটক দিয়ে ভেতরে ঢুকতেই বাম দিকে পরিত্যক্ত ভবনটি চোখে পড়ে। ডান দিকে নতুন ভবনটির অবস্থান। একটি কক্ষের মাঝখানে বেড়া দিয়ে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির ক্লাস চলছে। এক পাশের শব্দে অন্য পাশে পড়া তো দূরে থাক, কথা বলা ও শোনা মুশকিল। অন্য কক্ষটিতে বিদ্যালয়ের বোর্ড ও আলমারি দিয়ে বেড়া দেওয়া হয়েছে। এক পাশে পাক-প্রাথমিক শ্রেণির পাঠদান চলছে, অন্য পাশে দুজন শিক্ষিকা দাপ্তরিক কাজ করছিলেন।
বিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা জানায়, প্রতিদিন এই অবস্থায় ক্লাস করে তারা। শ্রেণীকক্ষের সংকট থাকায় বিদ্যালয়ে এসে অপর ক্লাসের ছুটির অপেক্ষায় বাইরে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। ওই ক্লাসের ছুটি হলে শ্রেণিকক্ষে বসতে পারে তারা। ক্লাসে একটু দেরি করে এলে বসার জায়গা পাওয়া যায় না। দুজনের বেঞ্চে কখনো গাদাগাদি করে চারজনকে বসতে হয়। পাশের কক্ষের চেঁচামেচিতে কী পড়ানো হয়, তা-ও ঠিকমতো বোঝা যায় না। তারা বলে, শ্রেণীকক্ষ সংকট তো আছেই, এর মধ্যে নেই কোনো খেলার মাঠ।শিক্ষার্থীদের কয়েকজন অভিভাবক জানান, বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে বসার জায়গাতে গাদাগাদি করে বসতে হয়। এক কক্ষকে দুই অংশে ভাগ করে শিক্ষকেরা ক্লাস নিচ্ছেন ঠিকই; কিন্তু পড়াশোনার কোনো পরিবেশ নেই। বিদ্যালয়ে খেলার মাঠ নেই। বিদ্যালয়ের দুই পাশে সড়ক। সেখানে খেলতে গিয়ে বিভিন্ন সময় গাড়িতে ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটেছে। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও বিষয়গুলো জানে। খুব দ্রুত ভবন ও খেলার মাঠ নির্মাণ করা দরকার।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুজিত চন্দ্র মজুমদার বলেন, বিদ্যালয়টিতে মাত্র দুটি কক্ষ হওয়ায় ক্লাস করতে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। ভালো পড়াশোনার জন্য স্থানীয়রা তাঁদের সন্তানদের কিন্ডারগার্টেন ও অন্য বিদ্যালয়ে ভর্তি করাচ্ছে। ফলে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী বাড়ার পরিবর্তে দিনে দিনে কমছে। উপজেলা শিক্ষা অফিসে বারবার অবগত করেও কোনো ফল পাচ্ছি না। এখানে চার কক্ষবিশিষ্ট একটি বিদ্যালয় ভবন, খেলার মাঠ দরকার। বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা অফিসকে একাধিকবার জানানো হয়েছে। তবে এখনো কোনো সাড়া মেলেনি।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও সোনাগাজী উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান সাখাওয়াতুক হক বিটু বলেন, নানা ভাবে চেষ্টা করছি; স্কুলটির ভবন ও মাঠের সংকট সমাধান করতে। সমস্যার কথা প্রশাসনকে অবহিত করার পরও কোন উদ্যোগ দৃশ্যমান হচ্ছেনা।
এ বিষয়ে আলাপকালে সোনাগাজী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ওয়াহিদুর রহমান বলেন, আলামপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টি আমরা সরেজমিনে পরিদর্শন করেছি। জরুরী ভিত্তিতে স্কুলটিতে নতুন ভবন নির্মাণের বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। এছাড়াও শিক্ষা কমিটির একাধিক সভায়ও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
শর্ত পূরণ না করায় ফেনীর ৯...
ফেনীর মেধাবী মুখ রিয়ার এড...
চৌদ্দগ্রামে জুয়া খেলার সর...
ছাগলনাইয়ায় অবহেলিত মানু...
Subscribe to our mailing list to get the new updates!