কবি পরিচিতিশেকড় সন্ধানী কবি ও লেখক শাকিল কালাম ৩ ডিসেম্বর ফেনী সদর উপজেলার ধর্মপুর ইউনিয়নের বরইয়া গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গভার্নেন্স স্টাডিজে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। পেশাগত জীবনে তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের উপ-মহাব্যবস্থাপক, কেন্দ্রীয় ব্যাংকার এবং কর্পোরেট গভর্নেন্স বিশেষজ্ঞ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন।
তিনি অনুবাদক হিসেবে বিশ্বখ্যাত। তিনি এ পর্যন্ত ২৬৫ জন বিদেশি কবির কবিতা অনুবাদ করেছেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কী-নোট স্পীকার হিসেবে বিভিন্ন সেমিনার, সিম্পোজিয়াম এবং আলোচনা সভায় অংশগ্রহণ করে থাকেন।শাকিল কালাম’র প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা তেত্রিশটি। তাঁর রচিত পাঠ্যবইসমূহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে রেফারেন্স বুক হিসেবে তালিকাভুক্ত এবং পড়ানো হয়ে থাকে। একসময় তিনি জাতীয় দৈনিক বাংলার বাণীসহ বিভিন্ন এবং সাপ্তাহিক পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তাঁর কবিতা বিশ্বের বিভিন্ন ভাষায় অনুদিত এবং বিশ্বের বিভিন্ন পত্রপত্রিকা, ম্যাগাজিন, ওয়েবপেজ, ইন্ট্রাগ্রামে প্রকাশিত হয়ে আসছে। তাঁর কবিতা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কাব্য-সংকলনে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে,
যেমন: Poets Unity World, PLIS Anthology Volume-1, The Passion Poetry Volume-1, Whispers oF Soflay Volume-5, The New Dawn and Hymn of Global Unity. তিনি বিভিন্ন সেমিনার, সিম্পোজিয়াম ও কনফারেন্সে যোগদান ও শিক্ষা সফরে ভারত, পাকিস্তান, ভুটান, দুবাই, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করেছেন। তিনি আন্তর্জাতিক সাহিত্য গোষ্ঠী থেকে বিভিন্ন পুরস্কার, সার্টিফিকেট এবং সম্মাননা লাভ করেন। সম্প্রতি তিনি "Order of Shakespeare Medal-2021" এবং "Gujarat Sahitya Academy Award-2021" লাভ করেছেন।প্রথিতযশা কবি শাকিল কালাম’র একগুচ্ছ কবিতা নিয়ে সাজানো হয়েছে আজকের সাহিত্য পাতা। -বিভাগীয় সম্পাদককবি শাকিল কালাম’র একগুচ্ছ কবিতা অমর প্রেমের কাব্য উপ্যাখান কোন প্রেমে মজিলা কায়েস, তুমি রঙিলা এদিনে।মক্তবেতে দেখিলা তুমি, লায়লা বিনতে মাহাদীকে; সে তো যেনো উলুবনে ছড়ানো একখ- হীরা-মুক্তা। ছাতিমের মতো ছিপছিপে দেহ তার কাঠিজোড়া। মায়া হরিণীর মতো তার চক্ষুজোড়া, তার এক দৃষ্টি ক্ষণকালে হাজারো হৃদয় ছিন্নভিন্ন করে দিতো।তার কাজল-পরা চোখের পলক হাজার হৃদয় ঝড় তুলতে পারতো।লায়লার চোখের অপলক চাহনি যেনো পুরো দুনিয়াকে করে দিতে পারতো ছারখার।তার লাস্যময়ী চেহারা; যেনো আরব-আকাশের চাঁদ। মানব হৃদয় ছিনিয়ে নেয়ার বেলায় সে যেনো পারস্যের ডানাকাটা পরী। ঘন কালো চুলের খোপে তার মুখ যেনো প্রদীপের মতো ঝকঝকে। কাকের মতোকালো চুলে তার ‘রাত্রি’ হয়েছে নাম স্বার্থক। কোকিলের কন্ঠে যখন লায়লার কথা যায় শোনা; তখনি মনে হয়, তা কী সম্ভব! এত সুন্দর হতে পারে কারো কণ্ঠ? তাহলে সূর্যও পশ্চিম দিক দিয়ে ওঠা খুব সম্ভব! যে দুধে লায়লা চুমুক দেয়, তাও যেনো গোলাপী হয়ে ওঠে তার ঠোঁটের পরশে।ভাগ্যবান; কে এ ভাগ্যবান মানুষ! টানাটানা কামনা চোখের মেয়েটি যাবে কার ঘরে! আলোকিত করবে কারে আবাসভূমি; দুনিয়ার স্বর্গতার গোলাপী গালের অই ছোট্ট তিলটিও যেনো; সারা বিশ্বের যে কোনো কিছু থেকে সবচেয়ে সুন্দর? অসম্ভব সুন্দর! মেঘহীন রূপোলি চাঁদের আকাশ। লায়লার ভাগ্যাকাশে নেমে এলো ঘোর অমানিশা। একবৃদ্ধের সঙ্গেই তাকে বাঁধতে হলো ঘরসংসার সেই দুঃখেতে বিহ্বল হলো আকাশ, বাতাস, বনের গাছপালা। কায়েস হলো ‘মজনু’ দিশেহারা মানব।লায়লার প্রেমে কায়েস, কায়সের প্রেমে লায়লা,পাগল হয়ে কায়েস ‘মজনু’ নামে খ্যাত এ চরাচরে।লায়লার জন্য কবিতা লিখে ঘুরে বেড়ায় রাস্তায়। কবিতা শোনাতে চায়, কেউ নাহি শোনে তার বয়ান,পাগল বলে দূরে ঠেলে দিলে আবার এসে শোনায়। এমন দুর্দশায় কাটে মজনুর দিনকাল; দিনাতিপাত।জঙ্গলে জঙ্গলে ঘুরে বেড়ায়, মনের কথা আপনমনে বলে পশুপাখির কাছে। নিষ্প্রাণ, নিস্তেজ কন্ঠধ্বনি।বুড়ো স্বামীর দুঃখে নিয়ে লায়লা হলো, পাগলপারা।একদিন উদাস বাতাসে খবর আসে মজনুর কাছে, এ ধরাধাম ছেড়ে গেছে লায়লা, পরপারের ঠিকানা। পাগলের মতো ছুটে আসে মজনু লায়লার কবরে,ক্রন্দনরত মজনুর প্রাণ বেরিয়ে যায় দেহ থেকে।এমন প্রেমের চিত্রকল্প কী আঁকা যায় কোনকালে ?শিল্পী তুমি ভালোবাসার রঙিন ছবি আঁকতে পারো! শিল্পী, তুমি কী বলতে পারো; ভালোবাসার রঙ কী?বেগুনি! নীল! আসমানী! সবুজ! হলুদ! কালো! লাল!তুমি তো কতো ছবি এঁকেছো!জলরঙের ছবি, তেলরঙের ছবি, ফিগার আঁকো,স্কেচ আঁকো, ব্যঙ্গছবি; আরো কতো ছবি!তুমি কখনো ভালোবাসার ছবি আঁকতে পেরেছো! জয়নুল এঁকেছেন বাংলার দূর্ভিক্ষ দিনের ছবি। লিওনার্দো ভিঞ্চির রহস্যময় মোনালিসা জগদ্বিখ্যাত। আমি বিমূর্ত রঙে এঁকেছি আমার ভালোবাসার ছবি!শিল্পী, তুমি ভালোবাসার একটি দৃশ্যমান ছবি আঁকো। প্রকৃতি দিগন্ত জুড়ে সাতরঙা রামধনু এঁকে দেয়, পুবাকাশে তার রঙের ছটায় ভরে যায় মানুষের মন।শিল্পী, তুমি ভালোবাসার নিসর্গের স্বাপ্নিক কবি!তুমি ভালোবাসার একটি রঙিন ছবি আঁকতে পারো! তোমার বাদামী তুলি সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে জমাট বাঁধা কালোতে আলো ফেলে; সৃষ্টিশীল পথ দেখাবে মুহূর্তে। তুমি অন্তত ভালোবাসার একট রঙিন ছবি আঁকো; যা আগামী প্রজন্মকে সুন্দর একটি পথ দেখাবে। কবিতার মতো মিলেমিশে থাকতে চাই সৃষ্টিকর্তা মানুষের জন্য পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন।এ পৃথিবীতে মানুষ অবাধে বিচরণ করবেএটাই ছিলো; স্বতসিদ্ধ নিয়ম; মানুষের অধিকার কিন্তু কতিপয় মানুষ তাদের স্বার্থে বানিয়েছে,যতসব কালাকানুন; কেড়ে নিয়েছে অধিকার;অবাধে চলাচল আর সম্পদ ভোগের অধিকার। চলাচলের জন্য চালু করেছে ভিসা নামক বাধা,এ পৃথিবী টুকরো টুকরো করেছো সীমান্তের নামে।বিভিন্ন দেশে নানা রঙের পতাকা উড়ছে; পতপত।আমি মানি না, মানবো না সীমারেখার বন্দীদশা। গ্লোবাল ভিলেজের যুগে; তোমার আমাকে বন্দী করে রেখেছো একটি খাঁচায়, আমি মুক্তি চাই।স্বাধীনভাবে ঘুরে ফিরে দেখতে চাই, সুন্দর এ ভুবন।তোমারা আমার ন্যায্য অধিকার হরণ করেছো। তাই আমি তোমাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করছি;আমি মানি না তোমাদের কাঁটাতার কাঁটাতার খেলা,দেয়াল তুলে নিষিদ্ধ করেছে নির্বিঘœ প্রবেশাধিকার।আমি উপড়ে ফেলবো; তোমাদের কাঁটাতারের বেড়া,ইট-পাথরের নির্মিত দখলদারিত্বের কঠিন দেয়াল। আমি পাসপোর্ট আর সীমান্ত পারাপারের কথিতভিসা নামক জটিল বেড়াজাল ছিঁড়ে ফেলবো।তোমরা আমার অধিকার ফিরিয়ে দাও; দিতে হবে। কবিতা বা সাহিত্যের রস্বাদন, দর্শন, আদর্শ, বাণী,দ্রোহ-বিদ্রোহ; কখনো তোমরা তা থামাতে পারবে না। প্রকৃতির অমোঘ নিয়মে তা পৌঁছে যাবে যে কোন সীমান্ত দিয়ে; প্রকৃতির বাতাস, সূর্যের আলোর মতো। তোমারা আমার যে কোন সৃজনশীল কর্মকা-ের;সুবাস গ্রহণ করতে পারো, তা ছড়িয়ে দাও এ ধরণীতে।সৃষ্টিশীলতা কোনো বিশেষ দেশ বা জাতির জন্য নয়।সৃজনশীল সাহিত্যকর্ম সারা বিশ্বের মানুষের জন্য।তাই আমি আমার কবিতার মতো, প্রাকৃতিক নিয়মে; চলাচল করে সবার সঙ্গেই মিলেমিশেই থাকতে চাই। বিশ্ব-সম্পদের সুষম বণ্টন চাই এ পৃথিবীকে বেঁচে থাকার মতো বাসযোগ্য করে গড়ে তুলতে হবে! আমরা কী তা করতে পারছি! না, পারছি না। পুঁজিবাদ; বিশ্বকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে! তারা আমাদের প্রকৃতি, পরিবেশ, প্রতিবেশ, জীববৈত্র্যি আর নিঃশ্বাস নেয়ার সকল উপাদান ছিনিয়ে নিচ্ছ। মুষ্টিমেয় শোষক পুঞ্জীভূত করেছে সব মানুষের সম্পদ। এখন পৃথিবীকে নতুন করে সবার জন্য গড়ে তুলতে হবে। যদিও পুঁজিবাদী অর্থব্যবস্থায় অতি কর্পোরেট মুনাফা, বেসরকারিকরণ ও উপনিবেশায়নের জন্য আমরা পৃথিবীর সম্পদ লুন্ঠন করাকে স্বাভাবিক বলে ধরে নিই। এখনি সম্পদের সুষম বণ্টন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করার জন্য; বিশ্বে একটা আন্দোলনের প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হচ্ছে; যা, আমাদের বারবার নিজেদের অহমবোধ, আত্মপরিচয় এবং সীমিত বা সীমাবদ্ধ জীবনের দিকে ঠেলে দেবে না। মানবসভ্যতাকে বাঁচাতে হবে পানি হলো জীবন ও প্রাণের আদি উৎস। ভূপৃষ্ঠের চারভাগের তিন ভাগই পানি।তা জমাটবাধা অবস্থায় রয়েছে মেরু অঞ্চলে, হিমালয়ের হিমবাহ ও এন্টার্কটিকা মহাদেশের জমাটবদ্ধ বরফে আছে পানির অফুরন্ত ভান্ডার। বায়বীয় বা বাষ্পীয় অবস্থায় রয়েছে মেঘমালায়, তরল আকারে আছে নদী, সাগর ও মহাসাগরে। বৃষ্টি আর নদীর পানি বিশুদ্ধ ও মানুষের ব্যবহার উপযোগী। বৃষ্টির পানি আল্লাহর বড়ো নিয়ামত। সময় মতো সঠিক পরিমাণে বৃষ্টি হলে তা চাষাবাদ,ফুল, ফল, ফসল ও শস্যদানা উৎপাদনে সহায়ক হয়। বৃষ্টির মিষ্টি পানি মৎস্য প্রজননে ভূমিকা রাখে। মানুষ যদি প্রকৃতির সাথে যথাযথ আচরণ করে; প্রকৃতি কখনো বিরূপ আচরণ করবে না।জলে-স্থলে যে বিপর্যয়; তা মানুষের হাতেরই কামাই। কেননা, আমরা প্রকৃতিকে ঠিকমতো যত্ন করি না;তার উপাদানগুলো নষ্ট করে ফেলি, বিনাশ করি;নিজ প্রয়োজনে বা তথাকথিত উন্নয়নের নামে। বৈশ্বিক উষ্ণতা ও গ্রিনহাউজ গ্যাস নিঃসরণের ফলে ঘুর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, বন্যা, অসময়ে বৃষ্টি, অনাবৃষ্টি, অতিবৃষ্টি, খরা, ভূমিধস, হিটডোম আর দাবানল; এসবই মানুষের নিজ হাতের কামাই আর কর্মফল।মানবসৃষ্ট কর্মকা- কতোটা দায়ী; তা এখন খূঁজতে হবে! এ পৃথিবীর প্রাকৃতিক পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন আর চরম আবহাওয়া পরিস্থিতি একই সূত্রে গাঁথা।মানব সভ্যতা, কৃষ্টি-কালচার আজ ধ্বংসের মুখে পতিতএখনি সময় সম্মিলিতভাবে মানবসভ্যতাকে বাঁচাতে হবে।(অনুসরণ সুরা রুম: আয়াত: ৪১) চেতনার কড়া নাড়াবে কে ? তিনি বায়ু প্রেরণ করেন, মেঘমালাকে সঞ্চালিত করেনতারপর মেঘমালাকে যেভাবে ইচ্ছে আকাশে ছড়িয়ে দেনএবং স্তরে স্তরে সাজিয়ে রাখেন। তা আমরা দেখে থাকি।তিনি আসমান থেকে বারিধারা বর্ষণ করেন।সে পানি দিয়ে আমরা সব উদ্ভিদের অঙ্কুরোদগম করি; অনন্তকাল তা থেকে সবুজপাতা বের হয়, তা থেকে শস্যদানা পাই।খেজুরগাছের মাথি থেকে ঝুলন্ত কাঁদি বের করেন আরজলপাই-জইতুন, ডালিম আর আঙ্গুরের বাগান সৃষ্টি করি।একটির সঙ্গে অন্যটির সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ ও বৈসাদৃশ্য পূণ।যখন ফলবান ও পরিপক্ব হয়, তাতে জ্ঞানের ভা-ার দেখি।বৃষ্টি থেকে সুপেয় পানি, উদ্ভিদ থেকে পশুচারণ ভূমি পাই। তিনি প্রকৃতিকে মানুষের জীবনধারনের জন্য অনুকূল,পৃথিবীকে বাসযোগ্য ও ভারসাম্যপূর্ণ করে সৃষ্টি করেছেন। গাছপালা এবং উদ্ভিদ মানুষ বেঁচে থাকার প্রধান অনুসঙ্গ। মানব সভ্যতার এক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো আগুন; তিনি এ সবুজ বৃক্ষরাজি থেকে আগুন প্রজ্জ্বলিত করেন।জীবনের জন্য মানুষ আর গাছপালা ও উদ্ভিদ পরিপুরক।তাছাড়া পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের প্রভাবক হলো উদ্ভিদ;এমন প্রয়োজনীয় গাছপালা আর বন কেটে সাফ করছি। আমরা একটুও চিন্তা করছি না, বাসযোগ্য পৃথিবীর কথা।বনায়নের সামাজিক আন্দোলন আর মানুষের চেতনার হায় রে মানুষ! রুদ্ধ দ্বারে বিবেকের কড়া কে নাড়াবে? অনুসরণঃ সূরা-রুম, আয়াতঃ ৪৮, সুরা-আনআম,আয়াতঃ ৯৯, সুরা-নাহল, আয়াতঃ ১০-১১, সুরা-ইয়াসিন, আয়াতঃ ৮০, সুরা-ওয়াকিয়া, আয়াতঃ ৭১-৭৩বিঃ দ্রঃ বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষ্যে রচিত। তারপর কী ? পৃথিবীতে মানব-সভ্যতা বিধ্বংসী মহামারি বিরাজমান, লকডাউন, কোয়ারান্টাইন বন্দীশালায় মানুষের জীবন।প্রাকৃতিক পরিবেশ তার স্বরূপ উদঘাটনে স্বচেষ্টায় ব্যস্ত,সবুজের সমারোহ আর বাহারি ফুলেফলে ভরা প্রতিবেশ।জীববৈচিত্র্য ফিরে পাচ্ছে তার হারানো নান্দনিক শোভা। একদিন করোনা মহামারী শেষ হবে, মুক্তি পাবে মানুষ; পৃথিবী হয়তো আবারো হাসি-গানে, আনন্দে ভরে যাবে। সোনামণিদের কলরবে স্কুল-আঙ্গিনা মুখরিত হয়ে উঠবে।কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে চাঞ্চল্য ফিরে আসবে। যুবক-যুবতীরা বাঁচার আশা খুঁজে পাবে সুন্দর ধরণীতে। বুড়ো মানুষেরা বলবেন, আরো কদিন বেঁচে থাকা যাবে।হাসপাতালের আইসিওতে আর একাকী মরতে হবে না।আর মরে গেলে দাফন-কাফন বা সৎকারে কেউ মুখ ফিরিয়ে নেবে না। মানুষ আবার প্রাণ খুলে হাসতে পারবে!বন্দীদশা থেকে মুক্তি পাবে; নীলাকাশে মুক্ত পাখির মতো। তারপর পৃথিবীর সবুজ-সতেজ পরিবেশ অটুট থাকবে!কার্বন নিঃসরণ ও বৃক্ষ নিধন কী বন্ধ হয়ে যাবে চিরতরে? কিন্তু আমরা কী বাসযোগ্য পৃথিবী বাঁচিয়ে রাখতে পারবো! প্রতিরোধ যুদ্ধ এখন আমার চারদিকে যুদ্ধময় দহনের দীর্ঘতম সেতু,পোড়ালাশের উৎকট গন্ধ, মরু বাতায়নে আমি আমার মাকে খুঁজে পাই; অবরুদ্ধ আমার মা। তবুও আমি মুক্ত; অস্ত্রহীন মুক্তিযোদ্ধা, স্বাধীনতাকামী এক ফিলিস্তিনি। আজ দখলদার বাহিনীর বোমার আঘাতে গাজা ভূমি কালো ধোয়ায় অন্ধকার, আগুনের লেলিহান শিখা, বিরামহীন বোমা হামলা চলছে, মুহুমুহু বোমা ফুটছে। মনে হয়, সুসজ্জি নগরী এখন এক বিধ্বস্ত ধ্বংস স্তুপ। নারী-পুরুষ, শিশু, যুবক-যুবতী, বৃদ্ধ-বৃদ্ধা কেউ আহত কিংবা নিহত, রাস্তায় পড়ে আছে অগণিত লাশ আর মানুষের আহাজারি। হাসপাতালে তিল ধারনের ঠাঁই নেই। আকাশ-বাতাস কান পেতে শুনছে, লাঞ্ছিত মানবতার গগনবিদারী কান্নার রোল, নিস্তব্ধ প্রকৃতি, মরু বাতায়ন ঠায় দাঁড়িয়ে আছে। থেমে গেছে চন্দ্র, সূর্য, গ্রহ-নক্ষত্ররা। যারা মানবতার জয়গান গায়; আজ তারাই অমানবতার বড়ো মদদদাতা, মারণাস্ত্রের বড়ো যোগানদার, ব্যবসায়ী।হায়রে মানবতা! একি রহস্যময় রূপ তোমার; ছলাকলা। আজ আমরা বড়ো নিঃস্ব, অসহায় হরিণ শাবকের মতো।কে আছো? হও আগুয়ান। বাঁচার যুদ্ধে আমাকে দাওহাতিয়ার, যোগাও সাহস, মনোবল। দাও ক্ষুধার রসদ।আমি প্রতিরোধ যুদ্ধ গড়ে তুলবো; পরাভব মানবো না। অন্যরকম মা! মায়ের মুখে চাঁদের হাসির বান ডেকে যায়, যখন তার কোল জুড়ে সুন্দর সন্তান থাকে।সন্তানেরা মায়ের কোলে আরো সুন্দর হয়;বাচ্চারা যখন সুশ্রী, স্বাস্থ্যকর এবং চটপটে হয়। যখন কোন মায়ের কোলে বিকলাঙ্গ কোন সন্তান থাকে,তখন সেই মায়ের মুখে কেমন অন্ধকার নেমে আসে! তা কেউ কী আমরা ভেবে দেখেছি? এরকম ঝাপসা চেহারা আজো কেউ কী দেখেছেন! কোনো ক্যামেরাম্যান এমন মায়ের ছবি তুলেছেন!কোনো শিল্পী কি সেই মায়ের মুখের ছবি এঁকেছেন? রেনেসাঁস কোথায় ? যে সমাজ স্রােতহীন নদীর মতো স্থবির, বোবা;সে সমাজে রেনেসাঁ আসতে পারে না। আসে না। রেনেসাঁ আনতে হলে সমাজকে প্রবাহমান করতে হবে। অনেক দেশ স্বাধীনতা পেয়েছে; রক্তরক্ষী যুদ্ধ করে। তবুও আমাদের মন-মানসিকতা পরিবর্তন হয়নি। বড়ো দেশ ভেঙ্গে ছোট দেশ গঠন করেছি। এক পতাকার বদলে অনেকে রঙের পতাকা উড়ছে আমার প্রিয় মাতৃভূমিসহ পৃথিবীর অনেক দেশে।কেবল বদলাতে পারিনি; আমাদের সমাজ, মনন, আমলাতন্ত্র, তোষামোদি আর জীহুজুদের দালালি, নৈতিকতা, পরিবারতন্ত্র, সমাজ, রাষ্ট্রতন্ত্র, দলবাজি আর গণতন্ত্রের তকমা। নারী ও পুরুষের সমতা আসেনি। নারী পায়নি তার নুন্যতম শ্রম অধিকার। গোত্র-জাতিগত প্রশ্নের মীমাংসা হয়নি আজঅবধি। স্বাধীনতার মূলমন্ত্র ছিলো, শোষণহীন, গণতান্ত্রিক, সুষম ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজব্যবস্থা, একটি মানবিক মর্যাদা সমাজ প্রতিষ্ঠা করা। যেখানে থাকবে না কোন অন্যায়, অবিচার, হয়রানি,দুর্নীতি, দুবৃত্তায়ন, সামাজিক অস্থিরতা। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা আর আইনের শাসন, দায়িত্বশীলতা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা, সামাজিক ন্যায়বিচার হবে সুশাসনের মূলনীতি। মানুষে মানুষে থাকবে না কোন ভেদাভেদ, অর্থনৈতিক বৈষম্যতা, সামাজিক দায়বদ্ধতার অভাব। সামাজিক সুস্থতা, সম্প্রীতি, মানুষের মঙ্গলই হবে প্রজাতন্ত্রের মূলমন্ত্র। রেনেসাঁ কোথায় আজ? আদৌ কী রেনেসাঁ আসবে ! সাম্যতা প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ের দিন আটই মার্চ; সাম্যতা প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ের দিন;বিশ্বময় পালিত হচ্ছে নারী দিবস।এবারের প্রতিপাদ্য বিষয়:‘করোনাকালে নারী নেতৃত, গড়বে নতুন সমতার বিশ্ব।’কোভিড-১৯ এর করালগ্রাসে ল-ভ- সারাবিশ্ব;স্থবির, লকডাউনে ঘরবন্দী নারী-পুরুষ সবাই। করোনা মহামারী সবার পথকে বন্ধুর করে তুলেছে,নারীরা হারালো তাদের কাজের নিশ্চয়তা, ব্যবসাপাতি সবি বন্ধ হলো নারী উদ্যোক্তাদের,বাড়লো পারিবারিক সহিংসতা। ‘মরার উপর খাঁড়ার ঘা’ - সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ,কিছু মা-বাবার মাথায় যেনো বাজ ভেঙ্গে পড়ে;বাল্যবিয়ের ধুম পড়লো শিশু-নারীর। এখন এসব নারীরা অকালে সন্তান জন্মদান, মা এবং শিশুর স্বাস্থ্যঝুঁকি, মৃত্যুহার, খাদ্য ও অপুষ্টি শিকার হবে।এসময়ে সামাজিক সহিংসতার শিকার হলো নারী। কিছু নারী পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্রের কাজ করে যাচ্ছেন সমান তালে। দায়িত্ব পালনে অনড় তারা।আবার এ করোনাকালে সৃজনশীলতা নিয়ে উদ্যোক্তা হিসেবে আবির্ভাব ঘটে কিছু নারীর। করোনাই তো সাম্যতার লড়াইটা নারীদের জন্য আরোকঠিন করে তুললো; কণ্টাকীর্ণ করে তুললো চলার পথ।এ সমতার লড়াইয়ে আপনিও হতে পারেন তাঁদের সহযাত্রী, তাহলে সব নারীর জন্য গড়ে উঠবে বৈষম্যহীন নতুন পৃথিবী। ভালবাসার রকম ফের স্বর্গ থেকে আসে প্রেম, স্বর্গে চলে যায় – এটাই বাণী চিরন্তন, এ পৃথিবীতে রেখে যায়তার কিছু কীর্তি-গাঁথা, রেখে যায় কিছু উপমা, উদাহরণ, চিত্রকল্প, কিছু ব্যথা-বেদনা, আনন্দ-যন্ত্রণা, সুখ-দুঃখ, আশা-আকাক্সক্ষা রেখে যায় আরো কিছু নিরাশা হতাশা। প্রেমের নির্যাস কী! কিবা তার রূপ, তাল,আমরা জানি, প্রেম মানে না কোন বাঁধা, বিঘœ আরোআছে তার অসীম গতি। নেই কোন মানচিত্র আরনেই কোন সীমারেখা।নেই কোন জাতপাত, নেই কোন জাতি, ধর্ম, বর্ণ, নেই কোন ভেদাভেদ ও দূরত্ব।বিচিত্র এ পৃথিবীতে প্রেমের আবির্ভাব, বহিঃপ্রকাশ,ধারাবাহিকতা সার্বজনীন, তার সার্বভৌমত্ব পৃথিবী। কোন দেশকাল, পাত্র-পাত্রী, কোনো কিছুই মানে না,প্রযুক্তির উন্নতির এ যুগে স্যোসাল মিডিয়ার অদৃশ্য মনিটরে বেঘোর থাকে প্রেমে, কিছু মানব ও মানবী।দেখা নেই, জানাশোনা নেই, তবুও তারা ভালোবাসে,প্রেম করে, ভুলে না কেউ কাউকে প্রেমের জয়গানে। কোন একসময় প্রেমের মোহনীয় টানে ছুটে আসে,বিদেশবিভুঁইয়ে অনিশ্চয়তার এক রঙিন পৃথিবীতে।পরাভূমে। সুখের ঠিকানার খোঁজে। আনন্দ-আশায়।কেউ পায় তার স্বপ্নের ঠিকানা, কেউবা হারিয়ে যায়,তখন তার নতুন যাত্রা শুরু হয়, রঙিন এক অজানাস্বপ্নভূমির পানে, নাম ঠিকানা বিহীন গন্তব্যের দিকে।আমরা কেউ জানি না, এ বায়বীয় প্রেমের পরিণতি,কোথায়? যন্ত্রণাকাতর সুখানুভূতি নাকি প্রতারণাকালো বিষময় এক জনপদের ঘোলাজলের খাদে। মহাকাশে নাম না জানা লাখো নক্ষত্ররাজির মেলা; সেখান থেকে আমাকে বারবার ডাকে, তুমি আসো,আমি আমার মানবীর ডাকে সাড়া দিতে পারছি না।আমি ভালো নেই, আমার মানসপ্রিয়ার যন্ত্রণাভোগে!
শর্ত পূরণ না করায় ফেনীর ৯...
ফেনীর মেধাবী মুখ রিয়ার এড...
চৌদ্দগ্রামে জুয়া খেলার সর...
ছাগলনাইয়ায় অবহেলিত মানু...
Subscribe to our mailing list to get the new updates!