নিজস্ব প্রতিনিধি: বিগত কয়েক বছর নানা গ্রাহক হয়রানীতে ডুবে থাকা ফেনীর বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানীর কার্যালয়টি শৃঙ্খলায় ফিরেছে। বর্তমানে এ কার্যালয়ে সেবাগ্রহীতাদের সাথে দালালের দৌরাত্ম নেই বললেই চলে। ই-নথি চালু হওয়ায় গতি এসেছে ফাইল চালাচালিতেও। গ্রাহকদের সমস্যা সমাধানে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়ায় স্বস্তি ফিরেছে গ্রাহক ও সেবাগ্রহিতাদের মাঝে। বিগত আড়াইমাসে এসবই হয়েছে ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ বাপ্পী শাহরিয়ার’র যোগদানের পর থেকে।
জানা যায়, দীর্ঘদিন ফেনীর বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানী লিমিটেড এ ছিলো অসাধু কর্মকর্তা, দালাল ও ঠিকাদারদের একটি সিন্ডিকেট। ওই সিন্ডিকেটের বাহিরে এ কার্যালয় থেকে সেবা গ্রহনকরা দুরূহ থাকায় গ্রাহকদের ভোগান্তির শেষ থাকতোনা। কার্যালয়টির দূর্নীতি ও গ্রাহক ভোগান্তির নানা বিষয় নিয়ে দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে বস্তুনিষ্ঠ খবর প্রকাশের পর কয়েক দফায় সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী বদলী হওয়ায় অসাধু দালালের সিন্ডিকেট ভেঙ্গে পড়েছে। বর্তমান ব্যবস্থাপক বাপ্পী শাহরিয়ারের যোগদানের পর তার যোগ্যতা আর সততার সামনে চিহ্নিত ওই অসাধু চক্র দাড়াতে পারেনি। এখন ভোগান্তি ছাড়াই সেবা পাচ্ছেন বাখরাবাদের গ্রাহকরা।
বাখরাবাদের সেবাগ্রহিতাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, মাস খানেক আগে ফেনী শহরের বিরিঞ্চি ও মঠবাড়িয়া এলাকায় গ্যাসের চাপ কম থাকায় গৃহাস্থির কাজে বেকায়দায় পড়ে গ্রাহকরা। বিষয়টি জানার পর কর্তৃপক্ষ স্বল্প সময়ের মধ্যেই বাইপাস লাইন স্থাপন করায় গ্রাহকদের ভোগান্তি কমেছে। তবে বাখরাবাদ কর্তৃপক্ষ জানায়, যেখানেই গ্রাহকের সমস্যা থাকবে সেখানেই তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে বদ্ধ পরিকর আমরা।
বাখরাবাদ সূত্রে জানা যায়, বিগত ২১ ডিসেম্বর ফেনীতে ব্যবস্থাপক পদে যোগ দেন বাপ্পী শাহরিয়ার। তার যোগদানের পর কার্যালয়ে যাবতীয় কার্যক্রম ডিজিটালাইজ্ড করা হয়েছে। কার্যালয়ে ই-নথি চালু থাকায় দাপ্তরিক কার্যক্রমে গতি এসেছে। এছাড়াও বর্তমান ব্যবস্থাপক যোগদানের পর অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করণ ও বকেয়া বিল আদায়ে নিয়মিত অভিযান জোরদার করা হয়েছে। তার যোগদানের মাত্র দুই মাস সময়কালে বিল বকেয়া ও অবৈধ সংযোগ গ্রহনের দায়ে ১৭৯টি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এসময়ে মিটার ট্যাম্পারিংয়ের অভিযোগে প্রাইম সিএনজি ফিলিং স্টেশনের সংযোগ স্থগিত করে ৩ কোটি ৬১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। ১০২ জন গ্রাহক থেকে স্পটে বকেয়া বিল আদায় করা হয় দেড় কোটি টাকা। শুধু তাই নয়; বর্তমানে ফেনী বাখরাবাদের শিল্প, সিএনজি ফিলিং স্টেশান ও ক্যাপটিভ পর্যায়ের কোন গ্রাহকের নিকট বকেয়া নেই। অবৈধ সংযোগ ও বকেয়া আদায়ের নিয়মিত অভিযান চলমান আছে।
বাখরাবাদ গ্যাসের গ্রাহক প্রতিনিধি বিপুল শর্মা জানান, নতুন ম্যানেজার যোগদানের পর এ কার্যালয়ে কাজের ক্ষেত্রে পূর্বের চেয়ে বর্তমানে অনেক বেশি স্বচ্ছতা ও গতি এসেছে। বাখরাবাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঝে কাজের সমন্বয় থাকায় গ্রাহকরা এর সুফল পাচ্ছে। অনলাইনে গ্যাস বিল পরিশোধের প্রচলন শুরু হওয়ায় গ্রাহকদের বিড়ম্বনা কমেছে। ফেনীস্থ বাখরাবাদের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ বাপ্পী শাহরিয়ার জানান, অত্র দপ্তরে দালাল, অবৈধ সংযোগদাতা ও গ্রহিতা, বিল বকেয়া রাখা গ্রাহকদের ব্যাপারে জিরো ট্রলারেন্স নীতি গ্রহন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ১৮ জন গ্রাহকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতির জন্য আবেদন করা হয়েছে। পক্ষান্তরে আবাসিক, বাণিজিকসহ সকল প্রকার গ্রাহককে সর্বোচ্চ সার্ভিস দিতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে বাখরাবাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এছাড়াও ফেনী বাখরাবাদের যাবতীয় কার্যক্রমে গতি এনে কাজের স্বচ্ছতা-জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে সর্বোচ্চ নির্দেশনা দিয়েছেন বাখরাবাদের ব্যাবস্থাপনা পরিচালক শংকর মজুমদার।
তিনি জানান, ফেনী বাখরাবাদের গ্রাহকদের গ্যাসের চাপ সঠিক রাখতে ২০২০ সালে একটি সার্ভে করা হয়েছে। ওই সার্ভের পর ফেনী শহর ও আশপাশের গ্রাহকদের সুবিধার্থে ফেনী আইসিএস থেকে ফেনী ডিআরএস স্টেশান স্থাপন প্রকল্প হাতে নেয়া হয়। ডিআরএস স্টেশান স্থাপনের জন্য ভূমির ব্যবস্থা করতে কুমিল্লা পিএলসিসি থেকে জেলা প্রশাসককে অনুরোধ জানানো হয়। তবে এখন পর্যন্ত ভূমি অধিগ্রহন না করতে পারায় তা থমকে আছে। শিঘ্রই জেলা প্রশাসকের সাথে আলোচনা করে ভূমি অধিগ্রহনের পর ডিআরএস প্রকল্প স্থাপন করা হবে। এ প্রকল্প চালু হলে ফেনী ও আশপাশের এলাকায় গ্যাসের সমস্যা আর থাকবেনা।
শর্ত পূরণ না করায় ফেনীর ৯...
ফেনীর মেধাবী মুখ রিয়ার এড...
চৌদ্দগ্রামে জুয়া খেলার সর...
ছাগলনাইয়ায় অবহেলিত মানু...
Subscribe to our mailing list to get the new updates!